ফকির লালন শাঁই
ফকির লালন শাঁহ (Fakir Lalon Shah) সে দিন ভোর বেলা মওলানা মলম ফজরের নামাজ পড়ে কালীগঙ্গা নদীর দিকে হাওয়া খেতে আসলেন, হটাতই দেখতে পেলেন এক অচেনা সংজ্ঞাহীন যুবক অধঃজলমগ্ন অবস্তায় পড়ে আছে, ছেলেটির মুখে ও শরীরে বসন্ত রোগের দাগ বিদ্যমান। তিনি কাছে গিয়ে দেখলেন ছেলেটি বেঁচে আছে, খুব ধীরলয়ে চলছে শ্বাস-প্রশ্বাস। নিঃসন্তান হাফেজ মলমের বুকের ভেতর হু হু করে উঠল, এ কোন অচেনা যুবক নয়; খোদা যেন তাঁর সন্তানকে ভাসিয়ে এনেছেন তাঁর কাছে। মলম তৎক্ষণাৎ বাড়ি ফিরলেন এবং তাঁর অপর তিন ভাইকে সাথে নিয়ে আসলেন।
এবার চার ভাইয়ে ধরাধরি করে অচেতন যুবককে নিজের বাড়িতে আনলেন। মলম ও মতিজান দিন রাত পরম যত্নে সেবা করতে লাগলেন। দিনে দিনে অচেনা যুবকটির মুখে জিবনের আলো ফিরে এলো। মতিজান জিজ্ঞাসা করলো – বাবা তোমার নাম কি ?
---- ফকির লালন।
-
ফকির লালন শাঁইজীর স্মরণে দোলপূর্ণিমা উৎসব ২০১৬
নিজামুদ্দিনের ধারণা, হয়তো দোল পূর্ণিমার তিথিতে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন বলেই লালন তাঁর জীবদ্দশায় ফাল্গুন মাসের দোল পূর্ণিমার রাতে খোলা মাঠে শিষ্যদের নিয়ে সারারাত ধরে গান বাজনা করতেন। সেই ধারাবাহিকতায় এখনো লালন একাডেমীর প্রতি বছর ফাল্গুন মাসের দোল পূর্ণিমার রাতে তিনদিন ব্যাপী লালন স্মরণউৎসব এর আয়োজন করে থাকে।
-
ফকির লালন শাহের ভাবচর্চা এবং গান ছাপা ও গাওয়ার সমস্যা
নবপ্রাণ আন্দোলনের তরফে কিছু কথা
নবপ্রাণ আন্দোলনের বাংলার ভাবান্দোলনের সঙ্গে একটা নাড়ির সম্পর্ক গড়ে তোলার সাধনা করছে। এই কালে “সাধনা” কথাটার ব্যবহার বিপজ্জনক। সরল ভাবে বলা যায় আমরা বাংলার ভাবান্দোলনের সঙ্গে আনন্দের, জ্ঞানের বা প্রজ্ঞার এবং একই সঙ্গে চর্চা বা কাজের সম্পর্ক রচনার চেষ্টা করছি।
-
আত্ননিবেদনের সুর – ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ
লালন শাহের কাব্যে আত্ননিবেদনের সুর
মানুষের মধ্যে কতকগুলি ভাব আছে, যার কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। যেমন সৌন্দর্যবোধ। পৃথিবীতে সভ্য, অসভ্য, অর্ধসভ্য সকল জাতির মধ্যে এই সৌন্দর্যবোধ বিদ্যমান আছে।
-
মহাত্মা লালন ফকীর - হিতকরী পাক্ষিক কুষ্টিয়া
১৫ কার্ত্তিক ১২৯৭/ ৩১ অক্টোবর ১৮৯০
লালন ফকীরের নাম এ অঞ্চলে কাহারও শুনিতে বাকী নাই। শুধু এ অঞ্চলে কেন, পূর্বে চট্রগ্রাম, উত্তরে রংপুর, দক্ষিণে যশোর এবং পশ্চিমে অনেকদূর পযন্ত বঙ্গদেশের ভিন্ন ভিন্ন স্থানে বহু সংখ্যক লোক এই লালন ফকীরের শিষ্য। শুনিতে পাই ইহার শিষ্য দশ হাজারের উপর। ইহাকে আমরা স্বচক্ষে দেখিয়াছি। আলাপ করিয়া বড়ই প্রীত হইয়াছি।
-
কে বানালো এমন রংমহল খানা
হাওয়া দমে দেখ তাঁরে আসল বেনা
কে বানালো এমন রংমহল খানা
হাওয়া দমে দেখ তাঁরে আসল বেনা।। -
পিরিত
না জেনে মজো না পিরিতে
না জেনে মজো না পিরিতে।
জেনে শুনে কর পিরিত
শেষ ভাল দাঁড়ায় যাতে।। -
গৌর চাঁদ
কেন চাঁদের জন্য চাঁদ কাঁদে রে
কেন চাঁদের জন্য চাঁদ কাঁদে রে
এই লীলার অন্ত পাইনে রে।
দেখেশুনে ভাবছি মনে
কথা কই কারে।। -
ভড়ূয়া বাঙ্গাল
মন তুই ভড়ুয়া বাঙ্গাল জ্ঞানছাড়া
মন তুই ভড়ুয়া বাঙ্গাল জ্ঞানছাড়া
সদরের সাজ করছ ভাল
পাছবাড়ীতে নাই বেড়া।। -
রসিক সুজন
রসিক সুজন ভাইরে দুইজন
রসিক সুজন ভাইরে দুইজন
বসে আছো কার আশে -
প্রেম পাথারে যে সাঁতারে
তাঁর মরণের ভয় কি আছে
প্রেম পাথারে যে সাঁতারে
তাঁর মরণের ভয় কি আছে।
স্বরূপ মরণে সদা মত্ত যারা
ঐ কাজে।। -
রুপের বাতি
এ বড় আজব কুদরতি
এ বড় আজব কুদরতি
আঠার মোকামের মাঝে
জ্বলছে একটি রুপের বাতি।। -
দিল্লি লাহোর
কে কথা কয় রে দেখা দেয় না
কে কথা কয় রে দেখা দেয় না।
নড়ে চড়ে হাতের কাছে -
সুখ
এই দেশেতে এই সুখ হল
এই দেশেতে এই সুখ হল
আবার কোথায় যাই না জানি। -
নিগূঢ় প্রেম
নিগূঢ় প্রেম কথাটি তাই আজ আমি
নিগূঢ় প্রেম কথাটি তাই আজ আমি
শুধায় কার কাছে।
যে প্রেমেতে আল্লাহ নবি মেরাজ করেছে।। -
শহরের ষোল জনা বোম্বেটে
করিয়ে পাগল পারা নিল তাঁরা সব লুটে
শহরের ষোল জনা বোম্বেটে
করিয়ে পাগল পারা নিলো তার সব লুটে। -
ক্ষ্যাপা
বল কারে খুঁজিস ক্ষ্যাপা দেশ-বিদেশে
বল কারে খুঁজিস ক্ষ্যাপা দেশ-বিদেশে
আপন ঘর খুঁজলে
রতন পাই অনাসে।। -
চিরদিন পোষলাম এক অচিন পাখী
ভেদ পরিচয়
হায় চিরদিন পোষলাম এক অচিন পাখী
পাখী ভেদ পরিচয় দেয়না মোরে
ঐ খেদে ঝোরে আঁখি।। -
কোন পথে যাবি মন ঠিক হলো না
কর লাফালাফি সার কাজে শুন্যকার
কর লাফালাফি সার কাজে শুন্যকার
টাকশালে পড়লে যাবে জানা।। -
চাঁদ আছে চাঁদে ঘেরা
রুপের গাছ
চাঁদ আছে চাঁদে ঘেরা
কেমন করে সে চাঁদ
ধরবি গো তোরা।। -
পাপ পূণ্যের কথা আমি কারে বা শুধাই
এই দেশে যা পাপ গন্য অন্য দেশে পূণ্য তাই
পাপ পূণ্যের কথা আমি কারে বা শুধাই
এই দেশে যা পাপ গন্য
অন্য দেশে পূণ্য তাই।।
পাতা 11 এর 17