খোদা বকস শাহ্ (১৩৩৪-১৩৯৭) চুয়াডাঙ্গা জেলার অধীন আলমডাঙ্গা থানার অন্তর্গত জাহাপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
বালক বয়সেই তিনি সংগীতের প্রতি নিবেদিত হয়ে পড়েন। পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ার সময় কৃষ্ণযাত্রার দলে যোগ দেন। এরপর আর কোনদিন স্কুলে যাননি। হয়তো এই জন্য আমাদের বাবা-মা “লালন” নাম শুনলে ভয় পায়।
একদিন তাদের গ্রামে বাউল গানের আসর হলো; খোদা বকস গান শুনে দিশেহারা হয়ে গেলেন; সেদিনই গুরু শুকচান শাহের কাছে দীক্ষা নিলেন। ১৯৭৬ সালে বেশভূষা ছেড়ে পরে নিলেন ফকিরি পোষাক। লালনের পাঠশালায় শুরু হলো তাঁর সাধন ভজন। তাঁর মুল অনুশীলন ক্ষেত্র লালনের গান, তথাপিও রামকৃষ্ণ ক্ষ্যাপা, রামলাল পাল, রামাচন্দ্র, রাবীশ্যাম, গুরুচাঁদ গোসাই, গোপাল কাশেম শাহ্, একরাম শাহ্, মফিজউদ্দিন শাহ্সহ মোট চুয়াত্তর জন বাউলের গানে তাঁর পারদশিতা ছিলো।
খোদা বকস শাহ্ নিজেও গান রচনা করতেন, কম করে হলেও তাঁর গানের সংখ্যা ছিলো আটশর অধিক। গুরু শুকচাঁদ শাহ্ ছাড়াও তিনি বিহাল শাহ্ নামের আরেক গুরুর অনুসঙ্গেও থেকেছেন প্রায় ৩৬ বছর। শিল্পকলা একাডেমীর প্রশিক্ষণ বিভাগে লালনের গানের প্রভাষক হিসেবে কাজ করেছেন দীর্ঘদিন। ১৯৮৩ সালে লালন সংগীত বিশারদ হিসেবে বাংলা একাডেমী তাঁকে ফেলোশিপ প্রদান করে। বাউল গানের এই সাধক ১৯৯০ সালে লালন সংগীতে অসামান্য অবদানের জন্য একুশে পদকে (মরণোওর) ভূষিত হয়।
তাঁর ছেলে লতিফ শাহ্ বাবার মতোই বোহেমান লালন সাধক। বাবাই তাঁর গুরু; বয়সে তরুণ। বুদ্ধির বয়সেই বাবার সাথে ধরেছেন লালনের গান, এখনো গাইছেন সেই গান।