বাংলা তথ্য ভান্ডার সমৃদ্ধ করতে আমাদের এই প্রয়াস। ইতিহাস এবং ঐতিহ্যর তথ্য দিতে চাইলে ইমেইল kushtia.contact@gmail.com অথবা ফোন করুনঃ- ০১৯৭৮ ৩৩ ৪২ ৩৩

Select your language

Photo credit: Najmul Islam - Golden Bangla
Photo credit: Najmul Islam - Golden Bangla

বাংলাদেশের সব চাইতে বেশী সুখী মানুষের বসবাস এবং ১৩তম বড় শহর কুষ্টিয়া শহর। সকল ফসল উৎপাদনে সক্ষম কুষ্টিয়ার মানুষ। নদী-নালা, খাল-বিল, হাওড়-বাওড় এবং বিভিন্ন জলাশয়ে ভরপুর কুষ্টিয়া অঞ্চল। আর এই কারণে মাছেও ব্যাপক সাফল্য দেখা যায়।

বর্তমানে শিল্প প্রতিষ্ঠানেও ভরপুর কুষ্টিয়ার অঞ্চল। বাংলাদেশ জয় করে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে গেছে কুষ্টিয়ার বিভিন্ন ধরণের পন্য। কুষ্টিয়ার প্রাকৃতিক পরিবেশ বিশুদ্ধ হওয়ার কারণে আদী হতেই অনেক গুণী মানুষ হয়ে গড়ে উঠেছেন। বিভিন্ন সামাজিক আন্দোলনে কুষ্টিয়ার মানুষের ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসনীয়, এ কারনে অনেকে পুরস্কারও লাভ করেছেন।

কুষ্টিয়া নগরায়ন শুরু হয় মূলত নীলকরদের আগমনের পর হতেই। ১৮৬০ সালে কলকাতার (তৎকালীন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর রাজধানী)সাথে সরাসরি রেললাইন স্থাপিত হয়। একারণে এ অঞ্চল শিল্প-কারখানার জন্য আদর্শ স্থান বলে তখন বিবেচিত হয়েছিল। তৎকালীন সময়ে যজ্ঞেশ্বর ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস(১৮৯৬), রেণউইক, যজ্ঞেশ্বর এণ্ড কোং (১৯০৪) এবং মোহিনী মিলস (১৯১৯) প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৪৭-এ ভারতবর্ষ ভাগের সময় কুষ্টিয়া পৃথক জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এর সাবডিভিশন ছিল কুষ্টিয়া সদর, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর। তৎকালীন এস ডি ও মৌলভি আব্দুল বারী বিশ্বাস কে প্রধান করে ১৯৫৪ সালে গঙ্গা-কপোতাক্ষ প্রকল্পের সদর দপ্তর স্থাপন করা হয়। এ ছাড়া আরো বেশ কিছু সরকারী অফিস কুষ্টিয়ায় স্থাপনের পরে শহরটিতে পুনরায় উন্নয়ন শুরু হয়।

কুষ্টিয়ার ভিতর দিয়ে বয়ে যাওয়া প্রধান নদীগুলো হল পদ্মা, গড়াই নদী, মাথাভাঙ্গা, কালীগঙ্গা, কুমার নদী ও ডাকুয়া খাল নদী। জেলাটির গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭.৮°সে এবং গড় সর্বনিন্ম তাপমাত্রা ১১.২°সে । এখানকার বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১,৪৬৭ মি.মি.। কুষ্টিয়া জেলা ৬টি উপজেলা, ৭টি থানা, ৫টি পৌরসভা, ৫৭টি ওয়ার্ড, ৭০টি মহল্লা, ৭১টি ইউনিয়ন পরিষদ, ৭১০টি মৌজা ও ৯৭৮টি গ্রামে বিভক্ত। কুষ্টিয়া জেলার জনসংখ্যা ১৭,১৩,২২৪ জন, যার মধ্যে ৫০.৮৬% পুরুষ ও ৪৯.১৪% মহিলা। জনসংখ্যার ৯৫.৭২% মুসলিম, ৪.২২% হিন্দু ও ০.০৬% অন্যান্য ধর্মাবলম্বী।

ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে কুষ্টিয়া কয়েকটি সাবডিভিশন নিয়ে গঠিত একটি বড় জেলা, যার প্রতিটি সাবডিভিশন পরবর্তীকালে জেলা হয়েছে। কিন্তু এই তিন জেলা চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও কুষ্টিয়ার মানুষের কাছে বৃহত্তর কুষ্টিয়া শুধুই একটি অতীত নয়, আরও কিছু। বিশেষভাবে উল্লেখ করা যায় যে, এই অঞ্চলের ও অবিভক্ত নদীয়া জেলার আদি বাসিন্দাদের মুখের ভাষার সাথে আধুনিক প্রমিত বাংলার ঘনিষ্ঠ মিল পাওয়া যায়। এই তিন জেলার অধিবাসীদের বৃহত্তর সমাজকে বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলা বলা হয়।

কুষ্টিয়ার কুমারখালি-খোকসা অঞ্চলে ব্যাপক ফসল উৎপাদন হয়। তার মধ্য অন্যতমঃ- ধান, পিঁয়াজ, আলু, তিল, কলা, বিভিন্ন ধরণের সবজি এবং ফল। কুষ্টিয়া সদরে বেশ ভালো ফসল উৎপাদন হয় তার মধ্যে ধান, কলা, আখ, ভুট্টা, বিভিন্ন ধরণের শাকসবজি উৎপাদন হয়। মাছ চাষেও বেশ এগিয়ে আছে কুষ্টিয়া সদর। মিরপুর ভেড়ামারা বিভিন্ন ফসলের পাশাপাশি তামাক এবং পান চাষে বেশ সমৃদ্ধ। আর এটাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে সেই ব্রিটিশ আমল থেকেই। দৌলতপুরে পানের বরজ, মাছ চাষ, বিভিন্ন ধরণের ফলের চাষ বেশ লক্ষণীয়।

কুষ্টিয়ানরা ধর্ম ভিরু এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনায় জাগ্রত। সকল ধর্মের মানুষের সাথে রয়েছে অভিন্ন এক মিল। যা অন্য কোন জেলাতে পাওয়া যায় না। সব ধর্মের মানুষ সব ধর্মের উৎসব উৎযাপন করে মহা ধুমধামের সাথে। এই জেলা হতেই প্রথমে ইসলাম প্রচার শুরু হয় যা ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে।

কুষ্টিয়ার এই জনপদে অনেক বিশিষ্ট ব্যাক্তি জন্ম নিয়েছেন এবং নিচ্ছেন। প্রখ্যাত বাউল, মরমী গানের স্রষ্টা, বিশিষ্ট আইনজীবী, মুক্তিযোদ্ধা, কৃষক আন্দোলন, সাময়িক পত্রসেবী, সমাজ বিপ্লবী, বাউল কবি, ভ্রমণ কাহিনী, উপন্যাস লেখক, প্রখ্যাত ব্যবসায়ী, প্রখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ, প্রখ্যাত সাহিত্যিক, ইতিহাসবিদ, আইনজীবি, আন্তর্জাতিক বিচারক, প্রখ্যাত স্বদেশী নেতা, সশস্ত্র সংগ্রামী, খ্যাতনামা শিশু সাহিত্যিক, খ্যাতনামা শিশু সংগঠক, দাবাড়ু, শিক্ষাবিদ, কবি, গীতিকার, মুক্তিযুদ্ধের বিশিষ্ট সংগঠক, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার রূপকার, আইনশাস্ত্রবিদ, মানবাধিকার আন্দোলন, বিশিষ্ট নাট্য নির্মাতা, অভিনেতা, বিশিষ্ট সংগীত পরিচালক, সুরকার, গায়ক এবং বিভিন্ন ধরণের নাম করা খেলোয়াড়।

পরিশেষে এক কথায় বলা যায় সমৃদ্ধ একটি অঞ্চল কুষ্টিয়া। প্রশাসন এবং সমাজের মানুষ সবাই এক সাথে কাজ করে তাহলে আরো অনেক কিছুই সম্ভব এই জেলা হতে।

Add comment

কুষ্টিয়া সম্পর্কিত তথ্য

সর্বশেষ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

তথ্য সম্পর্কে খবর

আমাদের নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করুন এবং আপডেট থাকুন
আমরা কুকিজ ব্যবহার করি
আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে কুকিজ ব্যবহার করি। তাদের মধ্যে কিছু সাইট পরিচালনার জন্য অপরিহার্য, অন্যরা আমাদের এই সাইট এবং ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা উন্নত করতে সাহায্য করে (কুকিজ ট্র্যাক করা)। আপনি কুকিজকে অনুমতি দিতে চান কিনা তা আপনি নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। দয়া করে মনে রাখবেন যে আপনি যদি সেগুলি প্রত্যাখ্যান করেন তবে আপনি সাইটের সমস্ত কার্যকারিতা ব্যবহার করতে পারবেন না।