বাংলা তথ্য ভান্ডার সমৃদ্ধ করতে আমাদের এই প্রয়াস। ইতিহাস এবং ঐতিহ্যর তথ্য দিতে চাইলে ইমেইল kushtia.contact@gmail.com অথবা ফোন করুনঃ- ০১৯৭৮ ৩৩ ৪২ ৩৩

Select your language

মৌলভী আফছার উদ্দিন আহমদ
মৌলভী আফছার উদ্দিন আহমদ

মৌলভী আফসার উদ্দিন আহমদ (জন্মঃ- ১৮৮৬ মৃত্যুঃ- ২৯শে জানুয়ারী ১৯৫৯ ইং) কুষ্টিয়া জেলার অন্যতম কৃতিসন্তান মৌলভী আফসার উদ্দিন আহমদ ১৮৮৬ সালে কুমারখালী থানার সুলতানপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মাহতাব উদ্দিন আহমদ। তাঁর ভ্রাতা অবিভক্ত বাংলার বিখ্যাত মন্ত্রী মৌলভী শামসউদ্দিন আহমদের নাম নানা কারণে বিখ্যাত হলেও মৌলভী আফছার উদ্দিন আহমদের মত নিঃস্বার্থ কর্মী, বিপ্লবী রাজনৈতিক নেতা, মানব-দরদী সমাজ সংস্কারক ও অনলবর্ষী বক্তা এ জেলায় খুব কমই জন্মগ্রহণ করেছেন।

তিনি হুগলী মাদ্রাসা পাশ করে সমাজসেবায় আত্ননিয়োগ করেন। মৌলভী আফছার উদ্দিন আহমদ জীবনে কোন চাকুরী গ্রহণ করেননি, কোন ব্যবসা পরিচালনা করেননি, জীবনে দুটি পয়সাও আয় করেননি অথচ তাঁর প্রচুর সুযোগ ছিল। জনসেবার জন্য তিনি পৈতৃক সম্পত্তির অধিকাংশ বিক্রি করে ফেলেছিলেন। তাঁর মত এমন নিঃস্বার্থ জনসেবক এ যুগে বিরল।

মৌলভী আফছার উদ্দিন আহমদ কুষ্টিয়ায় খেলাফত আন্দোলন, অসহযোগ আন্দোলন, ইসলাম সংস্কার আন্দোলন এবং বাউল বিরোধী “ন্যাড়ার ফকির খেদা” আন্দোলন পরিচালনা করে জনগনের মন এতটা জয় করেছিলেন যে অসহযোগ আন্দোলনকালে তাঁকে বন্দী করে নিয়ে যাওয়ার সময় হাজার হাজার মানুষ কুষ্টিয়া বড় ষ্টেশনের নিকট রেলের উপর শুয়ে পড়ে রেলগাড়ী কয়েক ঘন্টা চলতে দেয় নাই। শেষপর্যন্ত তিনি নিজে তাদের বুঝিয়ে শান্ত করেন।

মৌলভী আফছার উদ্দিন আহমদ বহরমপুর জেলে অবস্থানকালেই কবি নজরুলকে একটি টিয়া পাখি দিয়েছিলেন বলে জানা যায়। কবি নজরুল ইসলাম, দেশবন্ধু সিআর দাস এবং তাঁর পত্নি বাসন্তী দেবী, নেতাজী সুভাষ বোস, শেরে বাংলা এ,কে, ফজলুল হকসহ বহু বিখ্যাত নেতা তাঁর সুলতানপুর বাসভবনে আতিথ্য গ্রহণ করেছেন। তিনি সারা জীবন অক্লান্তভাবে তাঁর স্বজাতির জন্য যথাসাধ্য সেবা করে গেছেন।

তিনি “ন্যাড়ার ফকির খেদা” আন্দোলন পরিচালনাকালে বহু বাউল ফকিরকে ধরে নিয়ে যেয়ে একটা লোহার খুঁটির সঙ্গে বেঁধে তাদের লম্বা চুল ও গোঁফ কেটে দিয়ে মুসলমান করতেন। এসব কারণে বাউলেরা তাঁর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করলে জনগণ খুব উত্তেজিত হয়ে উঠে। ফলে বাউলেরা মামলা প্রত্যাহার করে নেয়। তিনি কুষ্টিয়ার “কুয়াতুল ইসলাম আলীয়া মাদ্রাসা” সুলতানপুর মাহাতাবউদ্দিন হাইস্কুল সহ বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মসজিদ নির্মাণ করেন।

মুসলমানরা আগে এ জেলায় দুধ মাছ বিক্রি করা, চুলকাটা, কাপড় ধোয়ার কাজ ইত্যাদি পেশা গ্রহণ করতে চাইত না, কিন্তু তাঁর প্রচেষ্টায় বহু লোক এসব পেশা গ্রহণ করে জীবিকানির্বাহ করে।

কুষ্টিয়া জেলার এই কৃতি সন্তান ১৯৫৯ সালের ২৯শে জানুয়ারী সুলতানপুরের নিজবাড়ীতে ইন্তেকাল করেন। তাঁর একমাত্র পুত্র মৌলভী সালাহউদ্দিন আহমদ একজন সমাজসেবক এবং জামাতা ব্যরিষ্টার মহম্মদ আব্দুল হক একজন রাজনীতিবিদ হিসাবে পরিচিত।

সুত্রঃ- ৫৭ খান মুহাম্মদ মঈনুদ্দীন ঃ যুগস্রষ্টা নজরুল।

Add comment

কুষ্টিয়া সম্পর্কিত তথ্য

সর্বশেষ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

তথ্য সম্পর্কে খবর

আমাদের নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করুন এবং আপডেট থাকুন