বাংলা তথ্য ভান্ডার সমৃদ্ধ করতে আমাদের এই প্রয়াস। ইতিহাস এবং ঐতিহ্যর তথ্য দিতে চাইলে ইমেইল kushtia.contact@gmail.com অথবা ফোন করুনঃ- ০১৯৭৮ ৩৩ ৪২ ৩৩

Select your language

রবীন্দ্রনাথ প্রতিটি বাঙ্গালীর মজ্জায় মিশে আছে - আবুল মাল আব্দুল মুহিত
রবীন্দ্রনাথ প্রতিটি বাঙ্গালীর মজ্জায় মিশে আছে - আবুল মাল আব্দুল মুহিত

বাংলাদেশ সরকারের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেছেন, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমাদের চেতনা, আমাদের অনুপ্রেরণা, বাঙালির জাতিসত্বা ও চলার শক্তি এবং প্রতিবাদের হাতিয়ার। বাঙালী জাতি বড় ভাগ্যবান যাদের সঠিক পথের দিশারী হিসেবে পেয়েছেন রবীন্দ্রনাথকে।

তিনি একমাত্র কবি যিনি বাংলা সাহিত্যকে সর্বপ্রথম বিশ্ব সভায় উপস্থাপন ও পরিচিত করান। তাঁর গান, কবিতা আজও মানুষকে বিমোহিত করে। রবীন্দ্রনাথ ছিলেন বাঙালীর অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাতিঘর, মহান কাব্যিক ও প্রবাদ পুরুষ। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অনন্তকাল ধরে বাঙালীর চেতনায় মিশে থাকবে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে কুষ্টিয়ার শিলাইদহ কুঠিবাড়িতে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এবং সাংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলা সাহিত্য সৌধের কালজয়ী প্রতিভা বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৭তম জন্মবার্ষিকীর ৩ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধনী দিনের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মন্ত্রী আরো বলেন, আমাদের প্রতিটি সংকটে আমরা বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অনুপ্রেরণার হাত ধরে উঠে এসেছি। এভাবেই বাঙালি জাতিকে সঠিক পথ দেখিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ। ষাটের দশকে আমরা যখন তাঁর জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠান এখানে করতে এসেছিলাম। তখন পাকিস্থানী মন্ত্রী ও শাসকদের প্রতিরোধে বাধাপ্রাপ্ত হই। এ পথ সহজ ছিলনা। মন্ত্রী বলেন, বাংলা সাহিত্যের এই কালজয়ী প্রতিভা শিলাইদহের মাটি-হাওয়ার গন্ধে একাকার হয়ে এখানে বসেই নোবেল জয়ী গীতাঞ্জলির অধিকাংশ রচনা করেন।

খুব কাছে থেকে দেখেছেন গ্রাম-বাংলার প্রকৃত রূপ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন বাঙালি চেতনার একজন আলোকিত মানুষ। যিনি সাধারণ মানুষের কল্যাণে ভেবেছেন, তাদের কাছে থেকে কষ্ট অনুভব করেছেন। আমাদের মজ্জায় মিশে আছে সংস্কৃতির প্রভাব। তিনি বলেন, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচনা আজকের আমাদের জাতীয় সঙ্গীত মুক্তিযুদ্ধের সময় বাঙালীদের সাহস ও শক্তি যুগিয়েছিল। ভারত-বাংলাদেশের মত দুটি দেশের জাতীয় সঙ্গীত তাঁর রচনা থেকেই। যা অমর হয়ে থাকবে। অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে বরণ করে নেন কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটগণ।

দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে হেলিকপ্টার যোগে শিলাইদহ ইউনিয়ন পরিষদ হেলিপ্যাডে সকল অতিথিবৃন্দ অবতরন করেন। এরপর কুঠিবাড়ীর আঙ্গিনার মঞ্চে আলোচনা সভা শুরু হয়। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ভারপ্রাপ্ত সচিব মোঃ নাসির উদ্দিন আহমেদ। স্মারক বক্তব্য রাখেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রফেসর ড. আবুল আহসান চৌধুরী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া-৪ ( খোকসা-কুমারখালী) আসনের সংসদ সদস্য আব্দুর রউফ, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এমপি। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক জহির রায়হান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, রবীন্দ্রনাথ সূর্যের মতন, তিনি অন্ধকারে বাঙ্গালীর আলোকবর্তিকা। ইংরেজরা রবীন্দ্রনাথ ঠেকানোর চেষ্টা করেছিলেন, পাকিস্তান তাকে নিষিদ্ধ করেছিল। আজও পাকিস্তানের প্রেতাত্মা, সাম্প্রদায়িক শক্তি রবীন্দ্রনা কে সয্য করতে পারেননা। সভাপতির বক্তব্যে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনে রবীন্দ্রনাথের অনেক বড় প্রভাব ছিল। যে কোন সংকটে বঙ্গবন্ধু রবীন্দ্রনাথের স্মরনাপন্ন হতেন, রবীন্দ্রনাথ পাঠ করতেন। তিনি বলেন, কুষ্টিয়া শহরে অবস্থিত রবীন্দ্র স্মৃতি বিজড়িত টেগর লজকে আধুনিকায়নের জন্য ইতিমধ্যে প্রতœ অধিদপ্তরের আওতায় নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি শিলাইদহে অবস্থিত রবীন্দ্রনাথের কাচারী বাড়ি ও দাতব্য চিকিৎসা কেন্দ্রকে ঘিরেও বিশেষ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।

পরে ‘হে নতুন, দেখা দিক আর বার জন্মের প্রথম শুভক্ষণ, তোমার প্রকাশ হোক, কুহেলিকা করি উদঘাটন সূর্য্যরে মতো’- কবিগুরুর এই গানটি পরিবেশনের মধ্যদিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয়। আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে বিভিন্ন স্থান থেকে আসা শিল্পীরা রবীন্দ্র সুরের মূর্ছণায় মাতিয়ে তোলেন কুঠিবাড়ি চত্বর। ৩দিনব্যাপী রবীন্দ্র উৎসবকে ঘিরে ভক্ত দর্শনার্থীদের ভীড়ে মুখরিত হয়ে উঠেছে কুঠিবাড়ি প্রাঙ্গণ। জেলার বাইরে থেকে, এমনকি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকেও এসেছেন অসংখ্য রবীন্দ্রপ্রেমী মানুষ ।

এদিকে, ১৯৯০ সালের পর এই প্রথম দীর্ঘ ১৮ বছর পর জাতীয়ভাবে শিলাইদহে রবীন্দ্র জয়ন্তী উদযাপনে এলাকায় সাজ সাজ রব পড়ে গেছে। সকাল থেকেই কুঠিবাড়ীর ভেতর ও বাইরে দেশী-বিদেশী রবীন্দ্র ভক্ত, দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখোরিত হয়ে উঠেছে। কুঠিবাড়ীর বকুলতলা, পুকুরপাড়, আম্রকাননে রবীন্দ্র শিল্পী, ভক্ত, অনুরাগীরা ঘুরে ঘুরে কবি গুরুর স্মৃতি স্পর্শ করছেন।

তথ্য কৃতজ্ঞতাঃ- আরিফ মেহমুদ - দৈনিক আন্দোলনের বাজার

Add comment

ইতিহাস এর নতুন প্রবন্ধ

সর্বশেষ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

তথ্য সম্পর্কে খবর

আমাদের নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করুন এবং আপডেট থাকুন
We use cookies

We use cookies on our website. Some of them are essential for the operation of the site, while others help us to improve this site and the user experience (tracking cookies). You can decide for yourself whether you want to allow cookies or not. Please note that if you reject them, you may not be able to use all the functionalities of the site.