১৯৭১ এর মহান মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগীতা করার কারনে হানাদার বাহিনী তাকে গুলি করে হত্যা করে। ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত জগতি ইউনিয়ন বোর্ডের প্রেসিডেন্ট ও চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৭১ সালের পর জগতি ইউনিয়ন ভেঙ্গে জগতি ও আলামপুর দুইটা ইউনিয়নে ভাগ হয়ে যায়।
আবুল হোসেন মৃধার বংশ পরিচয়ঃ
আলামপুর ইউনিয়ন, উজান গ্রাম ইউনিয়ন সহ আশপাশ এলাকা নদী গর্ভে থেকে জেগে উঠেছিল। হিসনা নদী এককালে খরস্রোতা ছিল। এই নদীটি দৌলতপুর থানার মহিষকুন্ডি এলাকায় পদ্মা থেকে বের হয়ে চাপাইগাছি বিলে মিশে পাশ দিয়ে বের হয়ে গেছে, এর একটি শাখা উজান গ্রাম হাঁটের পশ্চিম দিয়ে বের হয়ে গেছে।
আগে এটা বিশাল নদী ছিল, বিস্তৃতি বহুদূর ছিল। স্বস্তিপুরের ভিতর সি এন্ড বি রোডের লাগা পশ্চিম দিক দিয়ে প্রায় হাজার বছরর পূর্বে একটি খরস্রোতা নদী ছিল। যার ধারা এখনও রাস্তার পাশে পশ্চিমে দেখা যায়। বর্তমান বালিয়াপাড়া নদীর একটি চর ছিল। বালি ভর্তি বলে এখানে কোন চাষাবাদ হত না। কাশ বনে শুয়োর, ভাল্লুক এবং বাঘ বাস করত। লোক মুখে শোনা যায় প্রায় ৪০০ বছর আগে পশ্চিমা দেশ থেকে নদী পথে তিন যুবক নৌকায় করে আসে বর্তমান বালিয়াপাড়া। এরা হল রনগাজী এবং এক ঘোষ। মুসলমান হওয়ার পর পরবর্তীতে বাগু দেওয়ান। বাঘের পিঠে চরে বেড়াত বলে বাগু দেওয়ান নাম। যার মাজার ঐ অঞ্চলে আছে।
ধর্ম কর্মে আত্মনিয়োগ করে বলে খন্দকার পদবী নেয়। ঐ অঞ্চলে একাটি বিল ছিলো যার একটি শাখা আলমডাঙ্গার বিল আঞ্চলে যায়। ফলে ঔ আঞ্চলের নাম হয় ঘোষ বিলা। ঘোষবিলার খন্দকার পরিবারের পুর্বপুরুষ এই সাধক আওলীয়া।
রনগাজী ও বনগাজী খুবই পরিশ্রমী ও বলিষ্ঠ দেহের অধিকারী এবং দুঃসাহসী প্রকৃতির লোক ছিল। বন জঙ্গল সাফ করে চাষাবাদ শুরু করে। বনগাজীকে ভাল্লুকে ধরে খাই সেই রাগে রনগাজী একাই একটা ভাল্লু্ককে লাঠি দিয়ে মেরে ফেলে। ‘‘বালি অঞ্চলের এক যুবক লাঠি দিয়ে ভাল্লুক মেরে ফেলেছে” এই খবর মুর্শিদাবাদের নবাবের কাছে চলে যায়। বালি অঞ্চলের রনগাজী ভাল্লুক মেরেছে সেই থেকে ঐ আঞ্চলের নাম বালিয়াপাড়া হয়। তখন ভাদালেতে নবাবের চৌকি ছিল। নবাব পুরুস্কার স্বরূপ বনগাজীকে “খাঁ” উপাধি দেয় এবং ঐ চৌকিতে চাকুরি প্রদান করে। পরবর্তীতে নবাব দুই হাজার পাঁচশত বিঘা নিষ্কর জমি প্রদান করেন। রনগাজীর পুত্র দুলু খাঁ খুবই বুদ্ধিমান ছিল।
সেই ঐ সমস্ত অঞ্চলে বিভিন্ন এলাকা থেকে লোক এনে বসতি স্থাপন করে। তাদের মধ্য জমি বন্দবস্ত দিয়ে জোতদার বনে যায় এবং মৃধা উপাধি প্রাপ্ত হয়। তার পর থেকে ঐ পরিবারে কেউ চাকুরি করে নি। নিষ্কর জমির উপর কোন খাজনা দেওয়া লাগতো না। বালিয়াপাড়ায় দুলু খাঁর খড়েড় ষোল চালা বিশাল কাবারী ঘর ছিল।বাঘের হাত থেকে বাঁচার জন্য তাদের বাড়ীর চার পাশে পরীখা খনন করা ছিল। যার চিহ্ন এখনও দেখা যায়।
তাদের বংশধর আমীর আলী মৃধা পানীয় জলের অভাব দূর করার জন্য আলামপুরে বর্তমান সি এন্ড বি রোডে লাগা পশ্চিমে এক বিশাল পুকুর খনন করে দেন।