লালন গীতি

মা বলিয়ে চোখের দেখা

কি ভাব নিমাই তোর অন্তরে
মা বলিয়ে চোখের দেখা

দ্বীনের ডঙ্কা বাজে শহর মক্কা মদীনে

আয় গো যাই নবীর দ্বীনে
দ্বীনের ডঙ্কা বাজে
শহর মক্কা মদীনে॥

আপনার আপনি ফানা হলে

আপনার আপনি ফানা হলে
সে ভেদ জানা যাবে।
কোন/কী নামে ডাকিলে তারে
হৃদাকাশে উদয় হবে।।

এমন বয়সে নিমাই

ধন্য মায়ের নিমাই ছেলে
এমন বয়সে নিমাই
ঘর ছেড়ে ফকিরী নিলে॥

মুড়িয়ে মাথা গলে কাঁথা কটিতে কৌপিন পরা

আয় দেখে যা নতুন ভাব এনেছে গোরা
মুড়িয়ে মাথা গলে কাঁথা কটিতে কৌপিন পরা॥

রাধা বলে আজভাবি আজ

বলরে নিমাই বল আমারে
রাধা বলে আজভাবি আজ
কাঁদলি কেন ঘুমের ঘোরে॥

সে চাঁদ লক্ষ যোজন ফাঁকে রয়

হীরা মানিক জহুরা কোটিময়
সে চাঁদ লক্ষ যোজন ফাঁকে রয়

জীবের কি সাধ্য আছে গুণে পড়ে তাই বলা

সাঁই আমার কখন খেলে কোন খেলা।
জীবের কি সাধ্য আছে
গুণে পড়ে তাই বলা।।

জানিসনে মন হলি কেবল কামাবেশে মাতোয়ারা

সূর্যের সুসঙ্গে কমল কেমনে হয় প্রেমযুগল
জানিসনে মন হলি কেবল কামাবেশে মাতোয়ারা
নীচে পদ্মে চরকবানে
যুগল মিলন চাঁদ চকোরা॥

সে ফুলে ভাব নগরে কি শোভা করেছে

এক ফুলে চার রঙ ধরেছে।
সে ফুলে ভাব নগরে
কি শোভা করেছে।।

সে যে ব্রহ্মাবিষ্ণু হর, আদি পুরন্দর

নৈরাকারে ভাসছে রে এক ফুল।
সে যে ব্রহ্মাবিষ্ণু হর
আদি পুরন্দর
তাদের সে-ফুল হয় মাতৃকুল।।

ও তার কোথায় বৃক্ষ

একি আজগুবি এক ফুল
ও তার কোথায় বৃক্ষ
কোথায় আছে মূল।।

গায়বী খবর আর কি পাব আজ তুমি গেলে

রাসুলের সব খলিফা কয় বিদায়কালে।।

শুধালে খলিফা সবে রাসূল বলেছে

আশেক বিনা ভেদের কথা কে আর পোছে।।

রুপ ভাড়ায়ে দেশ বেড়ায়ে গেলেন সেই দয়াময়

রাছুলকে চিনলে পরে খোদা চিনা যায়।।

রাছুল পয়দা হলেন আল্লার নূরে

রাছুলকে তা চিনতে নারে।।

কারে বলিস নবী দিশা পালিনে

মন কি ইহাই ভাব আল্লা পাব নবী না চিনে।।

পাছে মারা যায় আইন তাই ভেবে মরি

নবী একি আইন করলেন জারী।।

মনে গিল্লাত পোরা রাশি রাশি

হতে চাও হুজরের দাসী
মনে গিল্লাত পোরা রাশি রাশি।।

একদিনও পাড়ের ভাবনা ভাবলিনা রে

পার হবি চুলের সাঁকো কেমন করে?
একদিনও পাড়ের ভাবনা ভাবলিনা রে।।