বাংলা তথ্য ভান্ডার সমৃদ্ধ করতে আমাদের এই প্রয়াস। ইতিহাস এবং ঐতিহ্যর তথ্য দিতে চাইলে ক্লিক করুন অথবা ফোন করুনঃ- ০১৯৭৮ ৩৩ ৪২ ৩৩

Select your language

খালেদ সাইফুদ্দীন - বীর বিক্রম
খালেদ সাইফুদ্দীন - বীর বিক্রম

শহীদ খালেদ সাইফুদ্দীন (জন্ম: অজানা - মৃত্যু: ১৯৭১) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর বিক্রম খেতাব প্রদান করে।

খালেদ সাইফুদ্দীনের জন্ম কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ রেলস্টেশন সংলগ্ন কাটদহ গ্রামে। এক ভাই, দুই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়। তার বাবার নাম মহিউদ্দীন আহমেদ এবং মায়ের নাম রমেলা খাতুন। তিনি অবিবাহিত ছিলেন।

১৯৭১ সালে কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন খালেদ সাইফুদ্দীন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ভারতে গিয়ে মুক্তিবাহিনীতে যোগ দেন। প্রশিক্ষণ নিয়ে যুদ্ধ করেন ৮ নম্বর সেক্টরের লালবাজার সাবসেক্টর এলাকায়। তিনি কয়েকটি অপারেশনে যথেষ্ট সাহসিকতা প্রদর্শন করেন।

১৯৭১ সালের ৫ আগস্ট চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর জেলার সীমান্তে বাগোয়ানের পাশে যোধপুরে ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের গোপন শিবির। অদূরে নাটু দহের হাজার দুয়ারী স্কুলে ছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ঘাঁটি। প্রকৃ তপক্ষে সেদিন পাকিস্তানি ঘাঁটিতে সেনা বদল হচ্ছিল। কিছুক্ষণ পর মুক্তিযোদ্ধারা খবর পান, বাগোয়ান গ্রামের মাঠ থেকে দুজন রাজাকার জোর করে ধান কেটে নিয়ে যাচ্ছে যা আসলে ছিল মিথ্যা খবর। এদিকে রাজাকারদের ধান কেটে নিয়ে যাওয়ার কথা শুনে খালেদ সাইফুদ্দীনসহ সাতজন মুক্তিযোদ্ধা বাগোয়ানে যান। তারা গিয়ে দেখেন সেখানে রাজাকার কেউ নেই। এরপর তারা আরেকটু এগিয়ে যান রতনপুর ঘাটে। সেখানে তাঁদের এক সহযোদ্ধা বোকামি করে একটি ফাঁকা গুলি করেন। সঙ্গে সঙ্গে ওপার থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে গুলি ছুটে এল তাঁদের দিকে। অবস্থা বেগতিক দেখে মুক্তিযোদ্ধারা দ্রুত পিছিয়ে বাগোয়ানে গিয়ে এক বাগানে আশ্রয় নেন। ঘুণাক্ষরেও তারা জানতে পারলেন না পাকিস্তানি সেনারা তাঁদের দিকে দ্রুত এগিয়ে আসছে। এর মধ্যে আরও ২৪ জন মুক্তিযোদ্ধা সেখানে আসেন। তারপর তারা দুই ভাগে ভাগ হয়ে এক দল রওনা হলো রতনপুরে। আরেক দল কাভারিং পার্টি হিসেবে পেছনে থেকে গেল। রতনপুরের দিকে অগ্রসর হওয়া দলে ছিলেন খালেদ সাইফুদ্দীনসহ ১৫ জন। তারা রেকি না করে সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ায় চরম বিপদে পড়েন। পথে পাকিস্তানি সেনারা ইংরেজি ‘ইউ’ শেফে অ্যামবু শ করে লুকিয়ে ছিল। মুক্তিযোদ্ধারা সেই অ্যামবুশের ভেতর ঢুকে পড়লে পাকিস্তানি সেনারা তাঁদের আক্রমণ করে। এতে প্রথমেই শহীদ হন দুই-তিন মুক্তিযোদ্ধা। খালেদ সাইফুদ্দীনসহ কয়েকজন সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধ করতে থাকলেন। মুক্তিযোদ্ধারা ছিলেন স্বল্প প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। তাঁদের অস্ত্রও বেশির ভাগ সেকেলে। অন্যদিকে পাকিস্তানি সেনারা অত্যাধুনিক অস্ত্র সজ্জিত ও দীর্ঘ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। খালেদসহ দু-তিনজন বু ঝতে পারলেন তারা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে পারবেন না। তখন তিনি ও হাসান নামে এক মুক্তিযোদ্ধা কাভারিং ফায়ার শুরু করে সহযোদ্ধাদের বললেন এই সুযোগে পশ্চাদপসরণ করতে। তাঁদের কাভারিং ফায়ারে সাতজন পিছিয়ে যেতে সক্ষম হলেও বাকিরা ব্যর্থ হলেন। পাকিস্তানি সেনারা ততক্ষণে তাঁদের খুব কাছাকাছি এসে ঘিরে ফেলেছে। তারা খুব কাছ থেকে খালেদ সাইফুদ্দীন ও অন্যদের গুলি করে হত্যা করে। দেশমাতৃকার মুক্তির জন্য নিঃশেষে প্রাণদান করে শহীদ হন আটজন মুক্তিযোদ্ধা।

Add comment

কুষ্টিয়া সম্পর্কিত তথ্য

সর্বশেষ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

তথ্য সম্পর্কে খবর

আমাদের নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করুন এবং আপডেট থাকুন
We use cookies

We use cookies on our website. Some of them are essential for the operation of the site, while others help us to improve this site and the user experience (tracking cookies). You can decide for yourself whether you want to allow cookies or not. Please note that if you reject them, you may not be able to use all the functionalities of the site.