বাংলা তথ্য ভান্ডার সমৃদ্ধ করতে আমাদের এই প্রয়াস। ইতিহাস এবং ঐতিহ্যর তথ্য দিতে চাইলে ইমেইল kushtia.contact@gmail.com অথবা ফোন করুনঃ- ০১৯৭৮ ৩৩ ৪২ ৩৩

Select your language

খন্দকার লুৎফেল হক উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের একজন শ্রেষ্ঠ সাধক এবং উচ্চমানের শিল্পী
খন্দকার লুৎফেল হক উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের একজন শ্রেষ্ঠ সাধক এবং উচ্চমানের শিল্পী

কুষ্টিয়ার আদি ও ঐতিহ্যবাহী পরিবারগুলোর মধ্যে খন্দকার লুৎফেল হকের পরিবার অন্যতম। খন্দকার লুৎফেল হক উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের একজন শ্রেষ্ঠ সাধক এবং উচ্চমানের শিল্পী। তিনি একজন সমাজ সেবক। গরীব ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়ার ভার তিনি নিজেই বহন করতেন এবং নিজ বাড়িতে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিতেন। তিনি একজন প্রগতিশীল চিন্তাধারার এবং মুক্ত মনের মানুষ ছিলেন। তিনি সাংস্কৃতিমনা মানুষদের খুবই ভালবাসতেন এবং এবং নিজ সন্তানদের সেই ভাবেই গড়ে তুলেছেন।

মহান মুক্তিযুদ্ধে তার পরিবারের সবাই সম্পৃক্ত ছিলেন, বিশেষ করে তার পুত্র আমিনুল হক বাদশা বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকে দেশবাসীকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে তৈরী করেছেন।

আমিনুল হক একজন সুদর্শন পুরুষ। ছাত্রজীবনে সরাসরি রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। ১৯৬২ সালে হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন বাতিলের আন্দোলনে কুষ্টিয়াতে নেতৃত্ব দেন। ১৯৬৪ সালের নির্বাচনে স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে তিনি কুষ্টিয়ার নেতৃত্ব দেন। আমিনুল হক বাদশা নিউক্লিয়াসের সদস্য ছিলেন।

১৯৬২ সালে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের জি,এস ছিলেন এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগে কেন্দ্রীয় কমটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। ইকবাল হলের জি,এস ছিলেন ১৯৬৪ সালে।

আমিনুল হক বাদশা একজন সেরা লেখক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, কলামিষ্ট সহ বহু গুনে গুণান্বিত। খন্দকার লুৎফেল হকের ছেলে রাজু আহম্মেদ একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে একজন শব্দ সৈনিক ও ভাষা সৈনিক ছিলেন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র তারই প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো। ‘জল্লাদের দরবার’ নাটকের একজন শ্রেষ্ঠ অভিনেতা যে নাটক সারা বিশ্বকে নাড়া দিয়েছিলো। খন্দকার লুৎফেল হকের পুত্র মান্না হক স্বাধীন বাংলা বেতারের গায়ক। খন্দকার লুৎফেল হকের পুত্র সেলিম উচ্চতর ট্রেনিং নিয়ে সক্রিয় ভাবে মুক্তযুদ্ধে অংশগ্রহন করেন। খন্দকার লুৎফেল হক ২৪শে এপ্রিল, ১৯৬৫ সাল, সোমবার মৃত্যুবরন করেন। তার স্ত্রী সখিনা বেগম ১৫ই আগষ্ট ১৯৯২ মৃত্যুবরন করেন।

বংশ পরিচয়ঃ-
খন্দকার লুৎফেল হকের পুর্ব পুরুষ প্রায় ৫০০ বছর পুর্বে মধ্যপ্রাচ্যের কোটদেব থেকে ধর্ম প্রচারের জন্য এদেশে আসেন এবং রাজশাহীর বাঘা এলাকায় বসতি স্থাপন করেন। ওখান থেকে আবার যশোরের বসুন্দিয়ায় হিজরত করেন। পীর, ফকির, ধর্ম প্রচারক খন্দকার মাহামুদ আলী কুষ্টিয়ার বটতৈল গ্রামে ধর্ম প্রচার করতে আসেন। বটতৈলের জোতদার তাকে দেখে আকৃষ্ট হন এবং তার সাথে কন্যার বিয়ে দিয়ে ঘরজামাই করে রাখেন। খন্দকার মাহবুব আলীর পুত্র খন্দকার মাহাতাব উদ্দিন। খন্দকার মাহাতাব উদ্দিন কৃষ্ণনগর কোর্টের নাজির ছিলেন এবং মেহেরপুর কোর্টে চাকুরীরত অবস্থায় অবসর নেন। খন্দকার মাহাতাব উদ্দিনের তিন পুত্র ডাঃ খন্দকার ফজলুল হক, খন্দকার লুৎফেল হক মোক্তার এবং খন্দকার আব্দুল হক কলকাতা পুলিশে চাকুরীরত ছিলেন। খন্দকার লুৎফেল হক বিখ্যাত সংগীত সাধক নগেন দত্তের ছাত্র ছিলেন এবং উচ্চ মানের শিল্পী ছিলেন।

খন্দকার লুৎফেল হকের বড় কন্যা সন্তান চপলা শৈশবেই মারা যান। পুত্র খন্দকার মাসুদুল হক চিত্রাভিনেতা রাজু আহম্মেদ নামে খ্যাত। খন্দকার আমিনুল হক বাদশা, খন্দকার রাশেদুল হক নবা, খন্দকার এমদাদুল হক মান্না, খন্দকার এনামুল হক টিপু, খন্দকার ওবাইদুল হক সেলিম, খন্দকার সামসুল হক লালিম, খন্দকার কামরুল হক শামীম, খন্দকার নুরুল হক নাসিম, এবং সর্বোশেষ কন্যা নাদিরা বানু কল্পনা।

রাজু আহম্মেদের তিন পুত্র, উজ্জ্বল ম্যানিলাতে, কল্লোল ও উৎপল আমেরিকায় বসবাস করে। রাজু আহম্মেদ স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ১১ই ডিসেম্বর আততায়ীর হাতে নির্মম ভাবে নিহত হন। আমিনুল হক বাদশা এবং তার দুই পুত্র আরিফ ও আকিল লন্ডনে বসবাস করে। খন্দকার রাশেদুল হক নবা সচিব হিসাবে রিটায়ার্ড করেন। তার পুত্র শুভ আমেরিকায় বসবাস করে। কন্যা স্বর্না অধ্যাপিকা আর এক কন্যা টিনা ডাক্তার। খন্দকার এমদাদুল হক মান্না ও পুত্র প্রিতম ও এক কন্যা মাধবী লন্ডনে বসবাস করে বড় মেয়ে শাওলি স্পেনে বসবাস করে। খন্দকার এমদাদুল হক টিপুর দুই কন্যা শ্রাবন্তী, তন্নী ও পুত্র ফারদিন। শামিমের পুত্র আদর ও কন্যা ফারিহা। নাসিমের কন্যা নিখিতা। কপ্লনার কন্যা দীপ্তা ও নম্রতা। খন্দকার সেলিমের পুত্র সংগীত আমেরিকায় চাকুরী করে। খন্দকার লালিমের পুত্র আরিফ চারুকলার ছাত্র।

Add comment

কুষ্টিয়া সম্পর্কিত তথ্য

সর্বশেষ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

তথ্য সম্পর্কে খবর

আমাদের নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করুন এবং আপডেট থাকুন
We use cookies

We use cookies on our website. Some of them are essential for the operation of the site, while others help us to improve this site and the user experience (tracking cookies). You can decide for yourself whether you want to allow cookies or not. Please note that if you reject them, you may not be able to use all the functionalities of the site.