বাংলা তথ্য ভান্ডার সমৃদ্ধ করতে আমাদের এই প্রয়াস। ইতিহাস এবং ঐতিহ্যর তথ্য দিতে চাইলে ইমেইল kushtia.contact@gmail.com অথবা ফোন করুনঃ- ০১৯৭৮ ৩৩ ৪২ ৩৩

Select your language

১৯৭১ সালে পাকি বাহিনীর ফেলা যাওয়া গোলাবারুদ
১৯৭১ সালে পাকি বাহিনীর ফেলা যাওয়া গোলাবারুদ

পরাধীন ব্রিটিশ শৃংখলে জর্জরিত ভারতীয় জাতিস্বত্বার অন্য দশটা গ্রামের মতই বাংলার স্মৃতিবিজড়িত হাটশ হরিপুর গ্রাম। পা বাড়ালেই শিলাইদহের কুঠিবাড়ী। তারই এক পাড়ে ফকির লালন শাহ্‌, তার পাশে মীর মোশাররফ, কাঙ্গাল হরিনাথ, অক্ষয় কুমার মৈত্রেয়’র স্মৃতিবিজড়িত কুমারখালী। আর একপাড়ে শ্রী শ্রী অনুকুল ঠাকুর। একদিকে হাতছানি প্রমত্ত পদ্মার, তারি কুল ঘেষে গড়াইয়ের মাঝে হরিপুর। ১৯১৮ সালে এই গ্রামে জন্মগ্রহন করেন জাহের আলী মিয়া।

পিতা ওকিল উদ্দিন। ৫ ভাই ২ বোনের আটপৌরে আর দশটা বাঙ্গালী সংসারের মতো সবার বড় হিসেবে পিতার কাজে সাহায্য করতে স্কুলের গন্ডি পেরোনোর সৌভাগ্য তার হয়নি। কবি আজিজুর রহমানের অকৃত্রিম বন্ধু হিসাবে তিনি হয়ে উঠেন স্বশিক্ষায় শিক্ষিত।

১৯৪২-৪৩ সালে ব্রিটিশ বিরোধী চেতনায় হরিপুরে গড়ে উঠে সুশিক্ষিত বাহিনী। তিনি এ বাহিনীর একজন সদস্য ছিলেন। ১৯৪৯ সালে তিনি কুষ্টিয়া শহরে চলে আসেন। ছোট্ট বেলা থেকেই শিশুদের নিয়ে কাজ করবার ও তাদের মুখে হাসি ফোটাবার চেষ্টা তার ভেতর ছিলো। সেইহেতু নারী শিক্ষা, অসহায়, দুস্থ, বিধবা মহিলা ও বৃদ্ধাদের শিক্ষায় তার যথেষ্ট অবদান ছিলো।

নিজেকে একজন কৃতি সমাজ সেবক, শিশু দরদী, সংসার ক্ষেত্রে সফল পিতা, সামাজিকতার ক্ষেত্রে তার ন্যায় পরায়নতার স্বাক্ষর রেখে গেছেন। ১৯৫১-৫২ সালে কুষ্টিয়া কলেজ যখন হাঁটি হাঁটি পা পা অবস্থা তখন ছাত্রদের বসার সুবিধার্থে ১০০টি বেঞ্চ দান করেন। ১৯৫৫ সালে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে এক্সরে মেশিন ক্রয়ের জন্য একটি বড় অংশ দান করেন। সেজন্য বর্তমান সিভিল সার্জন অফিসের গায়ে তার নাম খোদায় করা আছে।

মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্থানী হানাদার তার বাড়ী পুড়িয়ে দেয়। কুষ্টিয়াতে একটি শিশু হাঁসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা তার জীবনের বড় সাধ। ১৯৮২ সালে শিশু হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার উদ্দোগ নেন এবং শহরে এক বিঘা জমি দান করেন [যার মুল্য প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা]। কুষ্টিয়া ঈদ্গাহের উন্নয়নে তিনি দান করেন। ঈদগাহের চারপাশে নারকেল গাছ তার দানে হয়েছে। কুষ্টিয়া ছাত্র কল্যান ফাউন্ডেশন, কুষ্টিয়া হোমিওপ্যাথ কলেজ, শহীদ হাসান ফয়েজ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, পরিবার পরিকল্পনা সমিতি, কুষ্টিয়া উন্নয়ন পরিষদ সহ বিভিন্ন সংস্থার সাথে জড়িত ছিলেন। পেয়ারাতলায় তার নামে পৌরসভা একটি সড়কের নামকরন করেন। তিনি কোন পদের জন্য লালায়িত ছিলেন না। নিজের প্রতিষ্ঠিত কোন প্রতিষ্ঠানের পদও তিনি নেননি। প্রচার বিমুখ একজন জন দরদী ছিলেন জাহের আলী। ১৪ই জুন ২০০৫ তিনি মৃত্যুবরন করেন।

কুষ্টিয়ার ডি,সি আবুল খায়ের সাহেব বলেছিলেন আমি কুষ্টিয়া এসে এই ২২ লক্ষ লোকের মধ্যে একটি মাত্র সমাজ সেবক ও নিবেদিত প্রান পেয়েছি, তিনি জাহের আলী মিয়া।

তিনি কবি আজিজুর রহমানের স্মৃতি সংসদ গড়ে গেছেন। তার বড় ছেলে আশরাফ উদ্দিন নজু তারই মতো সমাজ সেবক হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রী নিয়ে সমাজ সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। সাউথ এশিয়া চিলড্রেন ফোরামে সম্পাদকের দায়িত্ব সুনামের সাথে পালন করে চলেছেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শিশু সংগঠক হিসাবে ইতিমধ্যে তিনি দেশে ও বিদেশে সুনাম অর্জন করেছেন।

Add comment

কুষ্টিয়া সম্পর্কিত তথ্য

সর্বশেষ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

তথ্য সম্পর্কে খবর

আমাদের নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করুন এবং আপডেট থাকুন
We use cookies

We use cookies on our website. Some of them are essential for the operation of the site, while others help us to improve this site and the user experience (tracking cookies). You can decide for yourself whether you want to allow cookies or not. Please note that if you reject them, you may not be able to use all the functionalities of the site.