লালন গীতি

লয়ে গুরুমন্ত্র ছেড়ে তন্ত্র ঠিক হয়ে বয় ঘাটের পড়

প্রেম যমুনায় ফেলবি বড়শী খবরদার।
লয়ে গুরুমন্ত্র ছেড়ে তন্ত্র
ঠিক হয়ে বয় ঘাটের পড়।।

রূপকাষ্ঠের নৌকাখানি নাই ডুবার ভয়

পারে কে যাবি নবীর নৌকাতে আয়
রূপকাষ্ঠের নৌকাখানি
নাই ডুবার ভয়।।

চেতন গুরুর সঙ্গ লয়ে খবর কর ভাই

কোথায় আছেরে সেই দ্বীন দরদী সাঁই
চেতন গুরুর সঙ্গ লয়ে
খবর কর ভাই।।

দেখা দিয়ে অহে রাছুল ছেড়ে যেও না

তোমার মত দয়াল বন্ধু আর পাব না
দেখা দিয়ে অহে রাছুল
ছেড়ে যেও না।।

যে ফুলে অটল বিহারী বলতে লাগে ভয়

যে ফুলে অটল বিহারী
বলতে লাগে ভয়।।

সত্য সুপথ না চিনিলে পাবি নে মানুষের দরশন

সত্য বল সুপথে চল ওরে আমার মন
সত্য সুপথ না চিনিলে
পাবি নে মানুষের দরশন।।

মিছে মায়ায় মজিয়ে মন কি করো রে

তুমি বা কার কে বা তোমার এই সংসারে
মিছে মায়ায় মজিয়ে মন কি করো রে।।

দয়াল চাঁদ মোর দিচ্ছে খেওয়া অপার সাগরে

আয় কে যাবি ওপারে
দয়াল চাঁদ মোর দিচ্ছে খেওয়া
অপার সাগরে।।

কেন ঘুরে বেড়াও ভেয়ে

হাতের কাছে মামলা থুয়ে
কেন ঘুরে বেড়াও ভেয়ে।

কবে সাধুর চরণ ধূলি মোর লাগবে গাঁয়

কবে সাধুর চরণ ধূলি মোর লাগবে গাঁয়
আমি বসে আছি আশা-সিন্ধুর তীরে সদাই।।

পড়েছি এবার আমি ঘোর সাগরে

পার করো দয়াল আমায় কেশে ধরে
পড়েছি এবার আমি ঘোর সাগরে।

ভব-যাতনায় আমার জ্ঞানচক্ষু আঁধার

মনেরে আর বুঝাই কিসে
ভব-যাতনায় আমার জ্ঞানচক্ষু আঁধার
ঘিরিলো যেমন রাহুতে এসে।

প্রেম রসিকা হব কেমনে

করি মানা কাম ছাড়েনা মদনে
প্রেম রসিকা হব কেমনে।।

আমি জনম-ভর একদিন দেখলাম নারে

আমার এ ঘরখানায় কে বিরাজ করে।
আমি জনম-ভর একদিন দেখলাম নারে।।

আমি একদিনও না দেখিলাম তারে

বাড়ির কাছে আরশী নগর
(একঘর) সেথা পড়শী বসত করে
আমি একদিনও না দেখিলাম তারে।।

মনের মানুষ যেখানে

কি সন্ধানে যাই সেখানে
মনের মানুষ যেখানে।
আঁধার ঘরে জ্বলছে বাতি
দিবারাতি নাই সেখানে।।

ধরতে পারলে মন বেড়ি দিতাম তাহার পায়

খাঁচার ভিতর অচিন পাখি কমনে আসে যায়
ধরতে পারলে মন-বেড়ি দিতাম তাহার পায়।।

এ যে যৌবন কাল কামে চিত্ত কাল

কাল কাঁটালি কালের বসে
এ যে যৌবন কাল কামে চিত্ত কাল
কোন কালে তোর হবে দিশে।।

বাঞ্ছা পুড়ায় সেভাবে রে সেভাবে

জীবে যে যা ভাবে বাঞ্ছা করে
বাঞ্ছা পুড়ায় সেভাবে রে সেভাবে
বাঞ্ছা কল্পতরু নাম আমার সকলেই জানে ।।

তুমি কার কাঁদায় কাঁদো মিছে

মন তোর আপন বলতে আর কে আছে।
তুমি কার কাঁদায় কাঁদো মিছে।।