বাংলা তথ্য ভান্ডার সমৃদ্ধ করতে আমাদের এই প্রয়াস। ইতিহাস এবং ঐতিহ্যর তথ্য দিতে চাইলে ইমেইল kushtia.contact@gmail.com অথবা ফোন করুনঃ- ০১৯৭৮ ৩৩ ৪২ ৩৩

Select your language

নীলকর জমিদারদের প্রধান ঘাঁটি কুষ্টিয়া
নীলকর জমিদারদের প্রধান ঘাঁটি কুষ্টিয়া

The main bases of the indigo planter in Kushtia

ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুতে কুষ্টিয়া জেলায় কয়েকজন নীলকর জমিদারি ক্রয় করেছিলেন। নীলকর ইংরেজগণ জোরপূর্বক প্রজাদের দাদন দিয়ে নীলচাষ করাতো। জন এন্ড ওয়াটসন কোম্পানির কুষ্টিয়া কুমারখালী ও খোকসায় কয়েকশ বর্গমাইল এলাকায় জমিদারি ছিল। এ অঞ্চলে সবচাইতে উৎকৃষ্ট মানের নীলচাষ হওয়ায় জমিদাররা প্রজা সাধারণকে দিয়ে জোরপূর্বক নীলচাষ করাতো। এ নীল আবাদের জন্য জমিদার, নীলকর, জোতদার প্রভৃতি সামন্ত প্রভুরা প্রজা জনসাধারণের ওপর অকথ্য অত্যাচার চালাতো। প্রজার জমির ওপর কোনো অধিকার ছিল না।

জমিদারগণ বাকি খাজনার জন্য প্রজাদের বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করতো। কাচারিতে ধরে এনে নির্যাতন করে হত্যা করলেও তার কোনো বিচার হতো না। নীলচাষ লাভজনক হওয়ায় তারা প্রজাদের ওপর এ অকথ্য নির্যাতন চালাতো।

১৭৭৪ সালে লুই বান্নো নামক এক ফরাসী যুবক বাংলাদেশে প্রথম নীলচাষ শুরু করে। পরের বছর ক্যাবল ব্লুম ইংরেজ প্রথম নীলকুঠি স্থাপন করেন। কুষ্টিয়া অঞ্চলে নীলচাষে ব্যাপক ফলন ও লাভজনক হওয়ায় ১৮১৫ সালের মধ্যে কুষ্টিয়াসহ সারাদেশে নীলকুঠি স্থাপিত হয়ে যায়। নীলগাছ ছিল পাটগাছ বা ভাং গাছের মতো। ৪/৫ ফুট লম্বা এ গাছটি বছরে ২ বার উৎপন্ন হতো। একবার বৈশাখ জৈষ্ঠমাসে ও আরেক বার আশ্বিন কার্তিক মাসে বপন করা হতো। তা কেটে হাউসে পচিয়ে পানি জ্বালিয়ে নীল রং তৈরি করা হতো। বাংলাদেশে বছরে ২০ লাখ ৪০ হাজার একর জমিতে প্রায় ১২ লাখ ৮০ হাজার মণ নীল উৎপন্ন হতো। চাষিদের এক বিঘা জমিতে আড়াই সের তিন সের নীল উৎপন্ন হতো। যার খরচ হতো ১২ টাকা। অথচ চাষিরা কুঠিয়ালদের কাছ থেকে পেত মাত্র এক টাকা থেকে ৩ টাকা। কারণে চাষিরা নীলচাষ করতে চাইতো না। ইংরেজ কুঠিয়াল এবং সরকার চাষিদের ওপর প্রায় দেড়শ বছর ধরে অমানুষিক নির্যাতন করেছে। ইংরেজ নীলকরগণ কুষ্টিয়া জেলায় চাষির জমি জোরপূর্বক দাদন লিখিয়ে কোনো টাকা না দিয়ে তাদের গরু-লাঙল দ্বারা নীলচাষ করিয়ে তাদের দ্বারা কেটে পচিয়ে নীল তৈরি করে নিয়েছে। অবাধ্য চাষিদের অপহরণ করে হত্যা করতো। যার কোনো সংবাদ পাওয়া যেতো না। কুষ্টিয়া জেলায় কয়েকজন নীলকর হলো টিআই কেনী, ফারগুসন, ক্রফোর্ড, স্টিভেনসন, সিমসন, সেস, শেলী, ওয়াটস, হেমিল্টন প্রমুখ।

নীলকরদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে দীর্ঘকালের অনাচার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ১৮৬০ সালে বিদ্রোহী হয়ে ওঠে। যেটা নীল বিদ্রোহে রূপ নেয়।

টমাস আইভান কেনীর অত্যাচারে কুমারখালীর শালঘর মধুয়ার (পিয়ারপুর, দূর্বাচারার কাছে) শেখ ও মৃধা দুটি পরিবার এবং পার্শ্ববর্তী কয়েকটি গ্রামের বহু পরিবার ভিটে মাটি ছেড়ে দেশ ত্যাগ করে। এ সকল কারণে মানুষের ধৈর্যের বাধ ভেঙে যায়। চাষিদের এসব অত্যাচারের প্রতিবাদে বেরিয়ে আসেন জমিদার প্যারী সুন্দরী।

প্যারী সুন্দরী, নীল বিদ্রোহের অবিস্মরণীয় চরিত্র। স্বদেশ প্রেমের অনির্বাণ শিখাসম এক নাম। অবিভক্ত বাংলার নদীয়া জেলার (বর্তমান কুষ্টিয়ার) মিরপুর উপজেলার সদরপুরের জমিদার রামানন্দ সিংহের কনিষ্ঠ কন্যা। আজীবন লড়েছেন মাটি ও মানুষের পক্ষে, দেশমাতৃকার স্বার্থে। অত্যাচারী নীলকরের বিরুদ্ধে গ্রামের সাধারণ মানুষ ও লাঠিয়ালদের নিয়ে তার সংগ্রাম কিংবদন্তিতুল্য। প্রতিপক্ষ ছিল নীলকর টমাস আইভান কেনি, সংক্ষেপে টিআই কেনি। ফার্গুসন, শেলি ক্রফোর্ড, স্টিফেনসন, সিম্পসন প্রমুখ অত্যাচারী নীলকরের মধ্যে সর্বাপেক্ষা ভয়ঙ্কর নাম। নীল কমিশনের সাক্ষ্যে বারাসাতের ম্যাজিস্ট্রেট অ্যাসলি ইডেন বলেছিলেন, ‘খুন, জখম, দাঙ্গা, ডাকাতি, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, মানুষ চুরি প্রভৃতি এমন কোনো অপরাধ নেই, যা নীলকররা করেনি।’ কেনির অত্যাচার ছিল এদের চেয়েও মাত্রাতিরিক্ত। যার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান প্যারী সুন্দরী।

কেনির কাচারি ছিল কুষ্টিয়া শহরের বেকিদালানে, কুঠি ছিল অনতিদূর শালঘর মধুয়ায়।

প্যারী সুন্দরীর দেশপ্রেম, প্রজাহিতৈষণার বিপরীতে কেনির অন্যায়, অত্যাচার ও নির্যাতনের কাহিনী ঐতিহাসিক গ্রন্থসমূহে দেখা যায়। হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত দ্য হিন্দু পেট্রিয়ট পত্রিকায়ও এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশিত হয়েছে। সবিশেষ রয়েছে মীর মশাররফ হোসেনের উদাসীন পথিকের মনের কথায়। প্যারী সুন্দরীর সাহস, বুদ্ধিমত্তা ও দেশপ্রেমের দৃষ্টান্ত ওই গ্রন্থে উদ্ধৃত হয়েছে এভাবে, ‘আমার লাঠীয়াল কুঠি লুট করিয়াছে, দশজনের মুখে এ কথা শুনিয়া আমার সুখবোধ হইতেছে। আমি বাঙালির মেয়ে, সাহেবের কুঠী লুটিয়া আনিয়াছি, ইহা অপেক্ষা সুখের বিষয় আর কি আছে!’

নীলকর কেনি ও জমিদারকন্যা প্যারী সুন্দরীর লড়াই ছিল নাটকীয়তায় পূর্ণ, যা কল্পনার গল্প-উপন্যাস-নাটকের কাহিনিকেও হার মানায়। ধূর্ততা, শঠতার ফাঁদের বিপরীতে বীরোচিত প্রজ্ঞা ও নৈপুণ্যে মাথা উঁচু করে দেশের জন্য সর্বস্ব দিয়ে নিজেকে উৎসর্গ করার ব্রত, বাংলার নীল বিদ্রোহের ইতিহাসে স্বদেশ প্রেমের অনির্বাণ শিখার মর্যাদা পেয়েছে।

প্রজাবান্ধব প্যারী সুন্দরীর জীবন ও কর্ম দেশপ্রেমে উজ্জীবিত করার মতো, অগ্নিমন্ত্রে দীক্ষিত হওয়ার মতো। যেমন, ‘যে ব্যক্তি যে কোনো কৌশলে কেনীর মাথা আমার নিকট আনিয়া দিবে, এই হাজার টাকার তোড়া আমি তাহার জন্য বাঁধিয়া রাখিলাম।...ধর্ম্ম সাক্ষী করিয়া বলিতেছি, সদরপুরের সমুদয় সম্পত্তি কেনীর জন্য রহিল।...দূরন্ত নীলকরের হস্ত হইতে প্রজাকে রক্ষা করিতে জীবন যায়, সেও আমার পণ। আমি আমার জীবনের জন্য একটুকুও ভাবি না। দেশের দুর্দ্দশা, নিরীহ প্রজার দুরবস্থার কথা শুনিয়া আমার প্রাণ ফাটিয়া যাইতেছে।’

প্যারী সুন্দরীর সঙ্গে সর্বস্ব হারানো জনগণের সর্বাত্মক অংশগ্রহণ ছিল। প্রতি বিঘা জমিতে নীলচাষে খরচ হতো ১০ টাকা, অথচ নীলকরেরা মূল্য দিতো সাড়ে তিন টাকা। নদীয়ায় ১৭ হাজার ৬০০ বিঘা জমিতে ৭০০ মণ নীল উৎপন্ন হতো। এর মধ্যে কুষ্টিয়া ছিল প্রথম, যার নেপথ্য ক্রীড়নক ছিলেন নীলকর টিআই কেনি।

প্রসঙ্গত, ঐতিহাসিক বিনয় রায় তার বাংলার সামাজিক ইতিহাসের ধারা গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, ১৭৭০ থেকে ১৭৮০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে ল্যুই বোনদ অবিভক্ত বাংলায় প্রথম নীলচাষ শুরু করেন।’ ক্যারল ব¬ুম স্থাপন করেন প্রথম নীলকুঠি। পরবর্তী সময়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সনদে ইউরোপিয়ানরা এ দেশে জমি কেনা ও নীলচাষের অনুমতি পায়।

কেনি ও প্যারী সুন্দরীর বিরোধের সূত্রপাত ভাড়ল-পোড়াদহ অঞ্চলের ধানের জমিতে জোরপূর্বক নীলচাষ করা নিয়ে। অত্যাচারে অতিষ্ঠ কৃষক, প্রজা, চাষিরা প্যারী সুন্দরীর কাছে দিনের পর দিন প্রতিকারের জন্য নালিশ জানায়। তিনি নায়েব রামলোচনকে লাঠিয়াল বাহিনী নিয়োগ ও আক্রমণের পরামর্শ দেন। কেনির বাহিনীর কাছে তারা পরাজিত হয়। ভাড়ল কুঠি লুণ্ঠিত হয়। কেনির অত্যাচার বৃদ্ধি পায়।

প্যারী সুন্দরী নতুন অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে কেনির কুঠিতে আক্রমণ করে। কেনি কুঠিতে না থাকায় প্রাণে বেঁচে যান। মিসেস কেনি অজস্র কাঁচা টাকা ছড়িয়ে দিয়ে প্যারী সুন্দরীর লাঠিয়ালদের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করেন। কেনি প্যারী সুন্দরীর বিরুদ্ধে কুঠি লুটের মামলা করেন।

ভীত না হয়ে উল্টো, গর্ববোধ করেন প্যারী সুন্দরী। কেনির মাথার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করেন এবং মিসেস কেনিকে বালা পরিয়ে বাঙালি বধূ সাজানোর অঙ্গীকার করেন। ক্ষিপ্ত হন কেনি। ঘোষণা করেন, যে প্যারী সুন্দরীকে তার কাছে এনে দিতে পারবে, তাকে তিনি এক হাজার টাকা পুরস্কার দেবেন এবং প্যারী সুন্দরীকে গাউন পরিয়ে মেম সাজিয়ে তার কুঠিতে রাখবেন। শুরু হয় পাল্টাপাল্টি পুরস্কার ঘোষণা ও আক্রমণ। আবারও কেনির কুঠিতে আক্রমণ করে প্যারী বাহিনী। চতুর কেনি পালিয়ে বাঁচেন। ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশও প্রাণে রক্ষা পায়। দারোগা মোহাম্মদ বক্স খুন হন। আবারও প্যারী সুন্দরীর বিরুদ্ধে মামলা হয়। প্রহসনের বিচারে যাবতীয় জমিদারি ইংরেজ সরকার অধিকার করে। গরিব কৃষক, চাষি ও প্রজা নিয়ে অকূলে পড়েন প্যারী সুন্দরী। রায়ের বিরুদ্ধে মামলা করে জমিদারি ফেরত পান। কিন্তু তখন তিনি ঋণের ভারে জর্জরিত, ফলে জমিদারির বিরাট অংশ পত্তনি বন্দোবস্ত করে দেন।

ড. আবুল আহসান চৌধুরী ‘প্যারী সুন্দরী নীল বিদ্রোহের বিস্মৃত নায়িকা’ শিরোনামে এক লেখায় উল্লেখ করেছেন, ‘প্যারী সুন্দরী প্রজাদরদি, স্বদেশপ্রাণ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনায় লালিত এক অসামান্য জননেত্রী।’

অত্যাচারী কেনি নিজেই স্বীকার করেছেন, প্যারী সুন্দরী সব দিক থেকেই তার চেয়ে অগ্রগামী ছিলেন। তার সাহস ও দেশপ্রেমের কাছে তিনি ভীতসন্ত্রস্ত ও শঙ্কিত ছিলেন। যেমন- ‘স্ত্রী লোকের মধ্যে প্যারী সুন্দরীর নাম করিতেও ভয় হয়।’

প্রজাদরদি, মানবহিতৈষী, দেশপ্রেমিক প্যারী সুন্দরী সমকালে বিস্মৃত এক নাম। বিপরীতে টিআই কেনি বর্বর অত্যাচারের প্রতিভূ। কুষ্টিয়া শহরের বেকি দালানের রাস্তাটি লোকমুখে এখনও কেনি রোড নামে পরিচিত। এই বেঁচে থাকা শ্রদ্ধা, ভয় না ঘৃণার, সেটি প্রশ্নসাপেক্ষ।

স্মরিত হোক কিংবা না হোক, প্যারী সুন্দরী নীল বিদ্রোহের ইতিহাসে সংযোজন করেছেন স্বদেশপ্রেমের অনির্বান শিখা। যে ইতিহাসের ব্যাপ্তিকাল ১৮৪৯ থেকে ১৮৬০ সাল পর্যন্ত। এসব আন্দোলনের ফলে বৃটিশ সরকারের দৃষ্টিগত হয়। এসব বাস্তব অবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য তদানীন্তন লেফটেন্যান্ট গবর্নর স্যার জন পিটার গ্রান্ট কুষ্টিয়ায় আসেন। তিনি কুমার নদী দয়ে কুষ্টিয়ায় আসার সময় তার জাহাজের সামনে চাষিরা ঝাঁপ দিয়ে জাহাজ থামান। এলাকার চাষিরা নীলচাষ বন্ধে তার হস্তক্ষেপ কামনা করেন। তার উদ্যোগে পানায় চাষিদের নিয়ে বিশাল সম্মেলন হয়। লেফটেন্যান্ট গবর্নর স্যার জন পিটার গ্রান্ট ওই সম্মেলনে অন্যান্য ফসলের মতো নীলচাষ করা আর না করা চাষিদের ছেড়ে দিয়ে চাষিদের এ অভিশপ্ত জীবন থেকে রক্ষা করেন। কেহ জোরপূর্বক চাষিদের নীলচাষ করালে কঠোরভাবে শাস্তি দেবেন বলেও ঘোষণা দেন। এ ঘোষণার পর থেকে চাষিরা নীলগাছ কেটে কালীগঙ্গা ও কুমারনদীতে নিক্ষেপ করেন।

এই সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ধানের জমিতে জোরপূর্বক নীলচাষে বাধ্য করার নীতি থেকে সরে দাঁড়ায় ইংরেজ সরকার। পরের বছর কুষ্টিয়াকে দেয়া হয় মহকুমার মর্যাদা। শুধু নামে নয়, চিরকুমারী প্যারী সুন্দরী জীবন ও কর্মেও ছিলেন দেশপ্রেমের এক অনন্য প্রতীক।

অপরদিকে কুষ্টিয়ার চুয়াডাঙ্গা মহকুমায় নীলকুঠির সংখ্যা ছিল প্রচুর। জমিদাররা এলাকার মানুষকে জোর করে এসব নীলচাষ করাতো। নীলকুঠির সাহেবরা সুদীর্ঘ কাল নীলচাষিদের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালাতো। তারা তাদের এ নীল ব্যবসাকে ধরে রাখার জন্য এ মহকুমাকে ৬টি ভাগে ভাগ করে। এ এলাকাতেও তাদের আধিপত্য গড়ে তোলে নিরিচ চাষিদের ওপর অত্যাচার চালাতো। এসব অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান সে সময়কার তেজস্বীনী ব্যক্তি মহেষচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। তার পিতা রাম সুন্দর চট্টোপাধ্যায় গোঁসাই দূর্গাপুর নীলকুঠির দেওয়ান ছিলেন। মহেষচন্দ্র পাঠশালায় লেখাপড়া শেষ করে একজন মৌলভীর নিকট আরবি, ফারসি শিক্ষাগ্রহণ করেন। পরে তিনি নীলকুঠিতে চাকরি গ্রহণ করেন। কিন্তু নীলকরদের অমানষিক নির্যাতন দেখে তিনি চাকরি ছেড়ে দেন।

এ সময় কিছুদিন দিনবন্ধু কৃষ্ণনাথের অনুরোধে তাদের “বাহার বন্ধ” পরগণার নায়েব হয়েছিলেন। তার সহয়োগিতায় অনেকেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলেন। তিনি অনেক দরিদ্র ছাত্রদের লেখাপড়া শিখিয়েচিলেন। তার সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলেন গোঁসাই দুর্গাপুরের বিচারপতি দ্বারকানাথ মিত্র।

নীলকর সাহেবদের অত্যাচারের হাত থেকে অসহায় কৃষকগণকে রক্ষা করার অপরাধে নীলকররা তার বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দেন। এতে তিনি সর্বস্বান্ত হয়ে যান। ১৮৬২ সালের জানুয়ারিতে মহেষচন্দ্র পরলোকগমন করেন। কুষ্টিয়ার নীল আন্দোলনে তার অবদান চির স্মরণীয়।

তথ্য সুত্রঃ দৈনিক সংগ্রাম

Add comment

কুষ্টিয়া সম্পর্কিত তথ্য

সর্বশেষ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

তথ্য সম্পর্কে খবর

আমাদের নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করুন এবং আপডেট থাকুন
We use cookies

We use cookies on our website. Some of them are essential for the operation of the site, while others help us to improve this site and the user experience (tracking cookies). You can decide for yourself whether you want to allow cookies or not. Please note that if you reject them, you may not be able to use all the functionalities of the site.