কুষ্টিয়া জেলার নামের উৎপত্তি “কুষ্টা” শব্দ থেকে। “কুষ্টা” বলতে পাটের "আঁশ" কে বুঝায়। নব্বই দশকেও পাটের উৎপাদন কুষ্টিয়া অঞ্চলে ভাল ছিল। বাংলাদেশ জন্ম নেওয়ার অনেক আগ থেকে এই অঞ্চল সুনাম রয়েছে। মুরুব্বীরা বলে থাকেন মুঘল আমল থেকে এই অঞ্চলের সমাদৃত।
কুষ্টিয়া শহর এমনি এক শহর, এই শহরের যোগাযোগ ব্যাবস্থা মুগল আমল থেকে ভাল। কিন্তু তখন রেল ব্যাবস্থা ছিল না। সেই সময় নদী এবং স্থল পথ দিয়ে ব্যাবসা বানিজ্য হতো। কুষ্টিয়া শহরের পাশ ঘেঁষে পদ্মা, গড়াই, কালী নদী বহমান।
নবাব সিরাজদৌল্লা সতেরেশ শতাব্দীতে তিনি পুরো বাংলা শাসন করেন। বর্তমানে এন এস রোড (নবাব সিরাজদৌল্লা সড়ক) নামে যে সড়ক টি রয়েছে, মুরুব্বীদের কাছে শোনা যাই, তিনি এই অঞ্চল আসলে এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতেন।
সেই সময় হতে এই সময় পযন্ত কুষ্টিয়া শহরে অনেক গুণী মানুষের বসবাস রয়েছে।
সাহিত্য ও সংস্কৃতির রাজধানী হিসেবে পরিচিত কুষ্টিয়া জেলার উত্তর পশ্চিম এবং উত্তরে পদ্মা নদীর অপর তীরে রাজশাহী, নাটোর ও পাবনা জেলা, দক্ষিণে ঝিনাইদহ জেলা, পশ্চিমে মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গা জেলা এবং ভারতের নদীয়া ও মুর্শিদাবাদ জেলা এবং পূর্বে রাজবাড়ী জেলা অবস্থিত। ভারতের সাথে কুষ্টিয়ার ৪৬.৬৯ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকা আছে।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত এই কুষ্টিয়া শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে বাংলাদেশকে করেছে সমৃদ্ধ। এছাড়াও বিষাদ সিন্ধুর রচয়িতা মীর মশাররফ হোসেন এবং বাউল সম্রাট লালনের তীর্থভূমি, পুরাতন কুষ্টিয়া হাটশ হরিপুর গ্রামে গীতিকার, সুরকার ও কবি আজিজুর রহমানের বাস্ত্তভিটা ও কবর, এ জনপদে জন্মগ্রহণকারী বিশিষ্ট কবি দাদ আলী, লেখিকা মাহমুদা খাতুন সিদ্দিকা, ‘‘এই পদ্মা এই মেঘনা’’ গানের রচয়িতা আবু জাফর, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শাহ আজিজুর রহমান, কুষ্টিয়ার সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রতিষ্ঠাতা কাঙাল হরিণাথ, নীল বিদ্রোহের নেত্রী প্যারী সুন্দরী, স্বদেশী আন্দোলনের নেতা বাঘা যতিন, প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী, সঙ্গীত শিল্পী মোঃ আব্দুল জববার, ফরিদা পারভীনসহ অসংখ্য গুণীজনের পীঠস্থান কুষ্টিয়াকে সমৃদ্ধ করেছে।