পুরো নাম ফকির নিজামুদ্দিন শাহ্, ডাক নাম নিজাম, ছেউড়িয়াতেই জন্ম বাংলা ১৩২৯ সালে। একুশ-বাইশ বছর বয়সে কুষ্টিয়া মোহিনী মিলে চাকুরী করতেন। চাকুরী বলতে তাঁতের কাজ।
মিল থেকে ছুটি হলে পায়ে হেঁটে লালনের আঁখরায় আসতেন, বসে বসে গান শুনতেন। গানের গভীরকথা তাঁকে আত্নসাবধান করতো, ভুলিয়ে দিত তাঁর সৃষ্টি যন্ত্রণা। তাঁর মতে লালনের গান উগ্রমনে নম্রতা আনে, গানই তাঁর দিল খুলে দেয়, গানেই বোঝা যায় কোনটা মরা, কোনটা বাঁচা। গানের সুরের চেয়ে গানের সারকথাই তাঁর কাছে মহৎ।
তাঁর দীক্ষাগুরু ফকির কোকিল শাহ্ অবিবাহিত ছিলো, নিঃসন্তান কোকিলের সেবাদাসীর নাম যশোধা ফকিরানী; পৈত্রিক সম্পত্তির সবই ব্যয় করে যান সাধু সেবায়। ফকির নিজামুদ্দিন আজ থেকে পঁয়তাল্লিশ বছর আগে খেলাফত গ্রহণ করেন, সেই থেকেই সংসারের হিসেব চুকে দিয়ে সৃষ্টি ছাড়া। লালনের সমাধি ঘরের ভিতরে পরে আছেন দীঘ সময়।
লালনের প্রতি তাঁর ভক্তির বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে সে জানায়
“দেখেন তো কথাঃ তাঁর জন্যই তো সম্পূর্ণ জীবন যৌবন অর্পণ করেছি”
চোখ বন্ধ করলে গুরু কোকিল শাহ্কে পরিষ্কার দেখতে পাই। নিজামউদ্দিন অল্প আহার করেন, খালি পায়ে হাঁটেন, বয়স তাঁকে দাড় করে দিয়েছে পচাশি বছরে। লালন ছাড়া অন্য কোন নেশা নেই; আমন কি চা পযন্ত খান না।
সারাদিন লালনের সমাধি ঘরের ভিতর কি করেন, জানতে চাইলে সে বলে –
ওমন বলরে সদাই
লা-ইলাহা ইল্লাল লাহ।