বাংলা তথ্য ভান্ডার সমৃদ্ধ করতে আমাদের এই প্রয়াস। ইতিহাস এবং ঐতিহ্যর তথ্য দিতে চাইলে ইমেইল kushtia.contact@gmail.com অথবা ফোন করুনঃ- ০১৯৭৮ ৩৩ ৪২ ৩৩

Select your language

ভেড়ামারার ইতিহাস
ভেড়ামারার ইতিহাস

Veramara History

বাংলাদেশে উপজেলা সদরের মধ্যে অন্যতম এবং গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি ভেড়ামারার। কুষ্টিয়া জেলা সদর হতে ২৩ কিলোমিটার উত্তর পশ্চিমে অবস্থিত ভেড়ামারা উপজেলা সদর। ১৫৩.৭২ বর্গকিলোমিটার ভূখন্ডের ভেড়ামারা উপজেলায় বসবাস করে ১লক্ষ ৭৫ হাজার ৪৮০ জন মানুষ। এর মধ্যে পুরুষ রয়েছে ৯০ হাজার ৭০০ এবং মহিলা রয়েছে ৮৪ হাজার ৭৮০ জন।

এ উপজেলার উত্তর পূর্বে পদ্মানদীর উপর দুই সমান্তরাল যুগল সৌন্দর্য ‘হার্ডিঞ্জব্রীজ’ ও ‘লালনশাহ’ সেতু। পূর্ব দক্ষিণে জেলার মিরপুর ও পশ্চিমে দৌলতপুর উপজেলা এবং পূর্বে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা। ১টি পৌরসভা ও ৬টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ভেড়ামারা উপজেলা পরিষদ। এখানে রয়েছে ৮১টি গ্রাম এবং ৪৩টি মৌজা। ভেড়ামারা পূর্বে থানা হিসেবে পরিচিতি থাকলেও ১৯৮১ সালের ৭ নভেম্বর ভেড়ামারা উপজেলা হিসেবে স্বীকৃতি পায়। কুষ্টিয়ার পরেই দেশের এবং বিশ্বের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ভেড়ামারার সুনাম। দেশের বৃহত্তম গঙ্গা কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্প, ৬০ মেগওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, বিশ্বের ১১তম বৃহৎ এবং দেশের বৃহৎ রেলওয়ে সেতু ‘হার্ডিঞ্জ ব্রীজ’ এবং নৈসর্গিক সমান্তরাল সেতু দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সড়ক সেতু ‘লালনশাহ’।

রয়েছে হযরত সোলাইমান শাহ্ চিশতির মাজার শরীফ এবং গায়েবী মসজিদ খ্যাত তিন গম্বুজ মসজিদ। ভেড়ামারা উপজেলার নামকরণের কোন সুনির্দিষ্ট ইতিহাস জানা যায় না। তবে লোক মুখে এবং শহুরীগ্রামাঞ্চলে নানা কথার প্রচলন রয়েছে। জানা যায়, ভেড়ামারা এলাকায় অতীতে প্রচুর ভেড়া পালন করা হতো। তৎকালীন ব্রিটিশ আমলে ট্রেন চলাকালীন অবস্থায় ভেড়ামারা ষ্টেশন সংলগ্ন এলাকায় একযোগে শতাধিক ভেড়া ট্রেনের নীচে পড়ে কাটা পড়ে মারা যায়। সেই সময় ‘ভেড়া’ হতেই ভেড়ামারার নামকরণ করা হয়েছিল ভেড়ার ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য।

দর্শনীয় স্থান :

ভেড়ামারার দর্শনীয় এবং মনেমুগ্ধকর স্থান রয়েছে। পদ্মা নদী দেশের একমাত্র যুগল সৌন্দর্যের দুই সমান্তরাল ব্রীজটি এই নদীর উপর দাঁড়িয়ে আছে যা ভেড়ামারায় অবস্থিত। ‘হার্ডিঞ্জ ব্রীজ’ এবং ‘লালনশাহ সেতু’র চারদিকে সবুজের সমারোহ। পূর্ব দিকে পদ্মা নদী। দুই সেতুর মাঝখানের পশ্চিম পাড় কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা এলাকা। একদিক থেকে অন্যদিকে তীব্র বেগে প্রবাহিত হচ্ছে প্রমত্ত্বা পদ্মার পানি। কংক্রীটের ব্লক দিয়ে বাঁধাই করা দীর্ঘ বাঁধের উপর দাঁড়ালেই এই পানির স্রোতের শব্দ শোনা যায়। এলাকাটির পরিবেশ অত্যন- চমৎকার এবং মনোমুগ্ধকর। এর উপর ‘লালনশাহ্’ সেতু সৃষ্টি করেছে এক নৈসর্গিক প্রাকৃতিক দৃশ্য্। এছাড়াও রয়েছে দেশের বৃহত্তম গঙ্গা কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্প। ভেড়ামারা ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ইত্যাদি। ভেড়ামারা উপজেলার ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ ৩টি মাজার এবং গায়েবী মসজিদ খ্যাত তিন গম্বুজ মসজিদ রয়েছে। এখানে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ ভক্ত আশেকানদের আগমন ঘটে।

ঘোড়েশাহ্ মাজার:
মাজারটি উপজেলা সদর হতে ৩ কিলোমিটার পশ্চিমে ধরমপুর ইউনিয়নে অবসি'ত। প্রতিবছর ওয়াজ মাহাফিলে প্রচুর ধর্মপ্রাণ মানুষের সমাগম ঘটে থাকে এখানে।

সোলেমান শাহ মাজার:
পদ্মা নদীর তীরে উপজেলা সদর হতে ৫ কিলোমিটার উত্তর পূর্বে মোকারিমপুর ইউনিয়নে সোলেমান শাহ্র মাজার অবসি'ত। প্রতিবছর ওয়াজ মাহাফিলে দেশ বিদেশের বিভিন্ন স্থান হতে লক্ষ লক্ষ ভক্ত আশেকান হাজির হয়।

ধরমপুর মাজার:
ছোট ছোট ইটদিয়ে ব্রিটিশ আমলে তৈরী ধরমপুর মাজার। মাজারে কিছু কিছু প্রাচীন নিদর্শনও পাওয়া যায়।

তিন গম্বুজ মসজিদ:
এটা অবস্থিত ধরমপুর ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া নামক স'ানে। শোনা যায়, কোন এক সময় একই রাতে পৃথিবীতে সাতটি গায়েবী মসজিদ তৈরী হয়, যা ফেরেস্তারা তৈরী করে বলে কথিত আছে। সে সময় তিন গম্বুজওয়ালা ঐ মসজিদটি সাতবাড়িয়া এলাকায় অসমাপ্তভাবে শেষ হয়। এটা অনেকের কাছে গায়েবী মসজিদ নামে পরিচিত।

হার্ডিঞ্জ ব্রীজ:
বিশ্বের ১১তম দীর্ঘ এবং দেশের বৃহত্তম রেলওয়ে সেতু ‘হার্ডিঞ্জ ব্রীজ’র নির্মাণ কাজ শেষ হয় ১৯১৫ সালে। ১৯১৫ সালের ৪ই মার্চ তারিখে শুভ উদ্বোধন করেন তৎকালীন ভাইস রয় লর্ড হার্ডিঞ্জ। তারই নামানুসারে পাকশী ব্রীজটির নামকরণ হয় হার্ডিঞ্জ ব্রীজ।

বিদেশী পর্যটক তথা অবিভক্ত ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসাম, ত্রিপুরা, নাগক্ষান- ও উত্তর পূর্ব অংশের সঙ্গে কলকাতা দিল্লীর সহজ যেগাযোগের কথা বিবেচনা করে অবিভক্ত ভারত সরকার ১৮৮৯ সালে পদ্মা নদীর উপর দিয়ে সেতু তৈরীর প্রস্তাব পেশ করেন। ১৯০৯ সালে পদ্মার ওপর দিয়ে ব্রীজ নির্মাণের জরিপ কাজ শুরু হয়। ১৯১২ সালে ভয়াল পদ্মার দুই তীর ব্রীজ রক্ষাকারী বাঁধ নির্মাণের প্রয়োজনীয় দেখা দিলে গাইড ব্যাংক নির্মাণ করা হয় উজান থেকে ৪/৫ মাইল পর্যন্ত। ব্রীজ নির্মাণের মূল কাজ শুরু হয় ১৯১২ সালে। সে সময় খরস্রোতা উন্মুক্ত পদ্মার স্রোতকে পরাজিত করে ১২টি কূপ খনন করা হয়।

৫হাজার ৮৯৪ ফুট দৈর্ঘ্যের এই ব্রীজটি ১৫টি স্প্যানে দাঁড়িয়ে আছে। প্রতিটি স্প্যানের ওজন ১ হাজার ২৫০ টন। ব্রীজটিতে ১৫টি স্প্যান দু’পাড়ে ৭৫ ফিট করে অতিরিক্ত ল্যান্ড স্প্যান রয়েছে। ২৪ হাজার ৪০০ জন শ্রমিকের দীর্ঘ ৫ বছর অক্লান- পরিশ্রমের পর ১৯১৫ সালে ব্রীজের কাজ শেষ হয়। ব্রীজটি নির্মাণ করতে তৎকালীন সময়ের সর্বাপেক্ষা ব্যয় হয় ৩ কোটি ৫১ লাখ ৩২ হাজার ১শ ৬৪ টাকা। এর মধ্যে স্প্যানের জন্য ১ কোটি ৮০ লাখ ৫৪ হাজার ৭শ’ ৯৬ টাকা, ল্যান্ড স্প্যান স্থাপনের জন্য ৫ লাখ ১৯ হাজার ৮শ’ ৪৯ টাকা, নদীর গতি নিয়ন্ত্রনের জন্য ৯৪ লাখ ৮৭ হাজার ৩শ’ ৪৬ টাকা, দু’পাড়ের রেল লাইনের জন্য ৭১ লাখ ৫৫ হাজার ১শ’ ৭৩ টাকা।

লালন শাহ সেতু:
লালন শাহ সেতু বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সড়ক সেতু। প্রমত্তা পদ্মা নদীর উপর নির্মিত ১৭৮৬ মিটার দৈর্ঘ্যের এবং ৭.৫ মিটার দুই লেন বিশিষ্ট সেতুটি বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের সাথে উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করেছে। সেতুটিতে মোট ১৭টি স্প্যান রয়েছে। এর মধ্যে ১৫টি স্প্যান ১০৯.৫ মিটার দৈর্ঘ্য এবং সেতুর উভয় প্রান্তের-র স্প্যান ২টির প্রতিটি দৈর্ঘ্য ৭১.৭৫ মিটার। ডিভাইডারসহ মূল সেতু ১৮.০৩ মিটার প্রশস-। ডিভাইডারের উভয় পার্শ্বে পরস্পর বিপরীতমুখী যানবাহন চলাচলের জন্য ৭.৫ মিটার প্রশস- ২ লেন ক্যারেজওয়ে এবং রেলিংসহ ১.০০ মিটার ফুটপথও তৈরী হয়েছে। ৩ মিটার ডায়ামিটার ও দীর্ঘ ৯১.০০ মিটার এবং অধিক ৬৪ টি সংখ্যার পাইল নির্মাণ এই সেতুর অন্যতম বৈশিষ্ট্য। এই সেতুর ডেক পৃথিবীর অবিচ্ছন্ন দীর্ঘতম ডেক। সেতুর উভয় প্রানে- ডুয়েল ২ লেন। এপ্রোচ সড়ক নির্মাণ করে প্রকল্পের আওতায় নির্মিত সংযোগ ১০ কিঃমিঃ ও পশ্চিম প্রান্তে- ৬ কিঃমিঃ এর মাধ্যমে এন ৭৪ জাতীয় মহাসড়কের সাথে যুক্ত করা হয়েছে।

প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় প্রায় ১০৬৫ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস-বায়নের জন্য জাপান ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন প্রায় ৮২০ কোটি টাকা ঋণ প্রদান করেছে। অবশিষ্ট অর্থ ২৪৫ কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকারের। ১৯৯৩-৯৪ সালের প্রকল্পটি বাংলাদেশ সরকার গ্রহণ করে এবং এর ফিজি বিলিটি স্টাডি, ডিজাইন ও নির্মাণ শেষে ১৮ মে ২০০৪ সালে সেতুটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়।

গঙ্গা কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্প:
দেশের বৃহত্তম গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পটি ভেড়ামারায় অবসি'ত। এ প্রকল্পের আওতাধীন দক্ষিণাঞ্চলের চারটি জেলার ১লাখ ৯৭ হাজার ৫শ’ হেক্টর জমি সেচ সুবিধা পায়। এর ফলে প্রতি বছর আবাদী জমিতে লক্ষ্য মাত্রার খাদ্যশস্য উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে।

এ প্রকল্পের আওতাধীন রয়েছে কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মাগুরা ও চুয়াডাঙ্গা জেলার লাখ লাখ কৃষকের আবাদী জমি। এই প্রকল্পে ৩টি মেইন পাম্প সহ ১২টি সাবসিডিয়ারী পাম্প রয়েছে। বর্তমানে এই প্রকল্পের করুন দশা। পানির অভাব এবং বিদ্যুতের লো-ভোল্টেজের কারণে প্রায়শঃই জমিতে সেচ সুবিধা প্রদানে ব্যর্থ হচ্ছে এই প্রকল্প। এই পাম্প চালাতে পানির প্রয়োজন নূন্যতম ১২ দশমিক ৬ মিটার। মূলত পানির অভাবে পাম্প গুলো অচল হয়ে পড়েছে। বিগত ১৯৫৪ সালে জি কে সেচ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। ১৯৭০ সালে প্রকল্পের প্রথম এবং ৮৩ সালে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শেষ করতে ব্যয় হয় ৭৩ কোটি ৮৯ লক্ষ টাকা। এ প্রকল্পের কাজের মধ্যে সাগরখালী খালে একটি ক্রস বাধ নির্মাণ অন্যতম। প্রথম পর্যায়ের কাজ চলা কালে বাধটি নির্মাণ করে প্রকল্পে গঙ্গা সেচ খাল তৈরী করা হয়।

৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র:
ভেড়ামারায় রয়েছে ঐতিহ্যবাহী ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। ৩টি ইউনিটে জাতীয় পর্যায়ের বিদ্যুৎ ঘাটতি নিরসনে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র যথেষ্ট গুরুত্ব বহন করে থাকে। গ্যাস টারবাইন এ ৩টি ইউনিট থেকে ৫৫ থেকে ৫৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় প্রতিদিন। যা বিদ্যুতের বর্তমান সংকটময় পরিসি'তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা বহণ করে থাকে। তেল দ্বারা চালিত এ ইউনিটগুলোর জন্য প্রতি ঘণ্টায় ২৫ হাজার লিটার ডিজেল তেল ব্যয় হয়। অর্থাৎ প্রতি ঘণ্টায় ব্যয় হয় ১ ওয়াগন ডিজেল।

দেশের দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চল ছাড়াও উত্তর অঞ্চলে বিদ্যুতের লোড শেডিং ও লো ভোল্টেজ কাটিয়ে ওঠার ক্ষেত্রে ভেড়ামারা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভূমিকা অত্যন- গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৭৬ সালে ভেড়ামারার ঐতিহ্যবাহী বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ১ ও ২নং ইউনিট দু’টি উৎপাদন শুরু করে এবং ৩নং ইউনিটটি উৎপাদনে আসে ১৯৮০ সালে । গ্যাস টারবাইন এ ইউনিট গুলোর কার্যক্রম ক্ষমতা বেঁধে দেওয়া হয়েছে সর্ব্বোচ্চ ২০ বছর। অথচ ১ও ২ নং ইউনিট টি চলছে ২৯ বছর এবং ৩ নং ইউনিট টি চলছে ২৫ বছর ধরে। এ কেন্দ্রটি বর্তমানে রুগ্নদশা চলছে।

৭১এর মুক্তিযুদ্ধ:
মুক্তিযুদ্ধের সময় ভেড়ামারার বীর সন-ানরা বলিষ্ট ভূমিকা রেখেছিল। সে সময়ের ইতিহাস ভেড়ামারার মানুষের জন গৌরবের ইতিহাস বলে বিবেচিত। কুষ্টিয়া জেলা তথা ৮ নং সেক্টরের সর্বশেষ যুদ্ধ হয় ভেড়ামারায়। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকবাহিনী এলাকার হাজার হাজার নারী পুরুষ, শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা করে পদ্মা নদীর পাড়ে লাশগুলো ফেলে দেয়। রাজাকাররা সাধারণ মানুষকে পাকবাহিনীর ক্যাম্পে ধরে নিয়ে গিয়ে নানাভাবে নির্যাতন করেছে। পাকবাহিনী বেশ কয়েকবার মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা আক্রমণের শিকার হয়েছে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বিভিন্ন গোরস'ান, ফসলের ক্ষেত, ডোবানালায় মানুষের মাথার খুলি হাড় পড়ে থাকতে দেখা গেছে। সে সময়ের অনেক স্মৃতি বিজড়িত স'ান ভেড়ামারা। যুদ্ধচলাকালীন সময়ে প্রতিরোধ করতে মিত্রবাহিনীর ছোঁড়া বোমায় হার্ডিঞ্জব্রীজের একটি গার্ডার ক্ষতিগ্রস' হয়। ব্রীজটি ক্ষতিগ্রস' করার উদ্দেশ্যই ছিল যোগাযোগ ব্যবস্থার ধ্বস। এই যুদ্ধে ভেড়ামারায় প্রায় ২ শতাধিক বীর বাঙালী সশস্ত্র সংগ্রাম করে। এর মধ্যে সম্মুখ সময়ে লড়াই করে ৮জন মুক্তিকামী বাঙালী শহীদ হয়েছিলেন। এরা হলেন, শহীদ জসিম উদ্দীন, শহীদ রফিক, চাঁদ আলী, নজরুল ইসলাম, গিয়াস উদ্দীন, লুৎফর রহমান, শাহাজান আলী, ফজলুল হক।

ঐতিহ্যবাহী পান:
অতি প্রাচীনকালে থেকেই ভেড়ামারায় পানের চাষ হয়। দিন যত গড়িয়েছে পানের চাষ ততই বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে ভেড়ামারায় পান দক্ষিণ পশ্চিমের ১০টি জেলার চাহিদা মিটিয়েও উত্তরবঙ্গসহ দেশের প্রায় ৪০টি জেলায় পানের চাহিদা মিটিয়ে থাকে। শুধু তাই নয় ভেড়ামারার পান সুদূর পাকিস্তানে রপ্তানী হয়ে থাকে। পান থেকে বাংলাদেশ প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জন করে থাকে।

Add comment

কুষ্টিয়া সম্পর্কিত তথ্য

সর্বশেষ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

তথ্য সম্পর্কে খবর

আমাদের নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করুন এবং আপডেট থাকুন
We use cookies

We use cookies on our website. Some of them are essential for the operation of the site, while others help us to improve this site and the user experience (tracking cookies). You can decide for yourself whether you want to allow cookies or not. Please note that if you reject them, you may not be able to use all the functionalities of the site.