শেষ হল ১২৪তম তিরোধান দিবস লালন স্মরণ উৎসব গত ২০শে অক্টোবর ২০১৪। লক্ষ লক্ষ লালন পাগলের পদধূলিতে মুখরিত ছিল লালন শাঁইজির আঁখড়াবাড়ী। দেশ বিদেশের অসংখ্য লালন ভক্ত ভিড় জমায় এই লালন স্মরণ উৎসবে। পাঁচ দিনের এই স্মরণ উৎসবে প্রতিদিন রাত দশ থেকে টানা ভোর চারটা পযন্ত লালনের গান পরিবেশন হয়।
দেশ বিদেশের অসংখ্য শিল্পী গান গেয়েছেন ফকির লালন শাঁইজীর মাঠে। এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে সাধুরা বসে তাঁদের ভাব দর্শন তুলে ধরে। সাধুরা তাঁদের নিজ নিজ অবস্থানে থেকেও গান পরিবেশন করেন লালন ভক্তদের জন্য।
লালনের আঁখড়া বাড়ি পাশে ভোটন সাধুর একটি আঁখড়া বাড়ি আছে, যার নাম “আয়না মহল”। মেলার সময় চলে সেইরাম গান যাকে বলে ননস্টপ, কি রাত কি দিন সবসময়। অনেক আগে থেকেই আয়না মহলে বিদেশি মানুষ এসে থাকে মেলার সময়। দেশি বিদেশি শিল্পীর সমন্বয়ে গান পরিবেশন হয়। সে এক অপুরুপ দৃশ এবং প্রতিটি গানই তাত্ত্বিক গান।
লালন মেলাকে কেন্দ্র করে লালন শাঁইজীর মাঠে গড়ে উঠে অনেক দোকান। মৃদু শিল্প, কারু শিল্প, বাউল গানের বিভিন্ন যন্ত্র কিনতে পাওয়া যায় এই সময়। হস্ত শিল্পের অনেক কাজ দেখা যায় এই মেলায়।
ফকির লালন শাঁইজীর আঁখরা বাড়ির কিছু দূরে রয়েছে মহা-শ্মশান। মহা-শ্মশানে এই লালনকে ঘিরে শুরু হয় মহা উৎসব। যা বসরের অন্য সময় দেখা যায় না। মেলার সময় সাধুদের গানে গানে মুখরিত থাকে দিন রাত এই শ্মশান। পাঁশেই গড়াই নদী বহমান। সে এক অপরূপ দৃশ্য।
{gallery}lalon2014{/gallery}
এই মেলার মূল উদ্দেশ্য লালনের বানীকে খণ্ডিত করে সাধারন মানুষকে বুঝানো। লালনের কথার ভাব দর্শন হয় এই উৎসবে। ফকির লালন ছিল মূর্খ। সে পড়াশোনা জানতো না। তাঁর ছিল না কোন স্থায়ী ঠিকানা। সে পথে পথে ঘুরতো আর মানব সমাজ নিয়া গান করতো। তিনি মূর্খ ছিলেন তবুও তিনি এতো জ্ঞানী হয়ে উঠেন। তাঁর কোন কথা ফেলে দেবার মতো নয়। আর হয়তো সে জন্য দিন দিন তাঁর জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে।
এইবারের আয়োজন সফল ভাবেই শেষ হয়েছে। আর এই সফলতার পিছে ছিল লালন পাগল ভক্তরা, স্থানীয় প্রশাসন এবং লালন একাডেমীর সদস্যবৃন্দ। তাঁদেরকে জানায় আমাদের পক্ষ থেকে আন্তরিক অভিনন্দন।
আসছে সামনে বছর দোল পূর্ণিমা উৎসবে আপনাকে আমন্ত্রণ।