কপিরাইট আইন কি?
কপিরাইট হল একটা আইন যা লেখা কন্টেন্ট, ছবি, সফটওয়্যার কিংবা যে কোনো জিনিস এর লেখক, প্রকাশক বা মূল মালিকের স্বত্ব বা অধিকার সংরক্ষন করে যা প্রকাশকের অনুমতি ছাড়া আপনি ব্যক্তিগত কাজে অথবা অন্য কোনো কাজে সরাসরি কপি করে ব্যবহার করেন তাহলে তাহলে এতে কপিরাইট আইন লঙ্ঘন হবে।
কপিরাইটের সুবিধাঃ
বর্তমান যুগে আপনার কোন সৃষ্টির কপিরাইটের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম সেটি আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কপিরাইটের অধিকারী লেখক, শিল্পীদের নানাবিধ সুবিধা ভোগ করার অধিকার দেয়া হয়। যেমন:
- লেখক নির্বিঘ্নে নতুন জ্ঞানের সন্ধান করেন। তার লেখা আইন দ্বারা সুরক্ষিত হওয়ার কারণে তিনি আরো নতুন সৃষ্টির জন্য পরিশ্রম করেন।
- লেখক, শিল্পীগণ তাঁদের কাজের জন্য সম্মানী পান, যা তাদের কাজে প্রেরণা যোগায়।
- লেখক, শিল্পীগোষ্ঠী তাদের সৃষ্টিকর্মের জন্য অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হন।
- কপিরাইট আইন লেখক, শিল্পীদের স্বার্থ রক্ষা করে এবং দেশের সরকারের এটা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব তাদের স্বাথরক্ষা করা।
- তাঁদের সৃষ্টিকর্ম অবৈধভাবে কেউ পরিবর্তন, পুন:মুদ্রণ বা নিজনামে ছাপাতে না পারে সে নিশ্চয়তা প্রদান করা হয় ও আইনের দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
- সমাজের উন্নতি সাধিত হয়, সৃজনশীল কাজের বিকাশ ঘটে।
- আন্তর্জাতিক কপিরাইট আইন সকল দেশের জন্য সুফল এনেছে। অন্য দেশের সৃষ্টিকর্ম আরেক দেশে নিরাপত্তা পায়।
- সাহিত্য ও শিল্পকর্মের আদান প্রদান ও বিনিময়ে অন্যদেশে যেমন তাদের রচনা ও শিল্পকর্মের চাহিদা সৃষ্টি হয়, তেমনি নিজ দেশে অন্যদেশের সাহিত্য ও শিল্পকর্মের আমদানি হয়।
বাংলাদেশে কপিরাইট আইনঃ
“বাংলাদেশ কপিরাইট আইন ২০০০”। এই আইনটি ১৮ জুলাই, ২০০০ সালে পাশ হয় এবং বাংলাদেশ গেজেটে প্রকাশিত হয়। ইতোপূর্বে বাংলাদেশের “কপিরাইট আইন(১৯৭৪)” তদানীন্তন পাকিস্তান সরকার কর্তৃক জারিকৃত কপিরাইট আইন ১৯৬২ সনের সংশোধিত রূপে কার্যকর ছিল। তদানীন্তন পাকিস্তান সরকারের জারিকৃত ১৯৬২ সনের কপিরাইট আইনটি বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর এক সংশোধনীর মাধ্যমে “বাংলাদেশ কপিরাইট আইন-১৯৭৪ “ হিসেবে প্রচলন করা হয় এবং ১৯৭৪ হতে ২০০০ সালের ১৭ জুলাই পর্যন্ত কার্যকর ছিল।
বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসঃ
সৃজনশীল ব্যক্তি তাঁর মেধা প্রয়োগ করে যা কিছু সৃজন করেন তাই মেধাসম্পদ। মেধাসম্পদের মালিকানা নিবন্ধনের লক্ষ্যে কপিরাইট অফিস ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। কপিরাইট অফিস একটি আধা-বিচার বিভাগীয় প্রতিষ্ঠান। এর কার্যাবলী কপিরাইট আইন-২০০০ (২০০৫ সালে সংশোধিত) ও কপিরাইট বিধিমালা ২০০৬ মোতাবেক পরিচালিত হয়। এ অফিস যে প্রধান ৪টি কাজ করে থাকে তা হল :
- সৃজশীল মেধাস্বত্বের কপিরাইট রেজিস্ট্রেশন প্রদান ;
- আপিল মামলা নিষ্পত্তিতে কপিরাইট বোর্ডকে সহায়তা প্রদান ;
- পাইরেসি বন্ধকরণে টাস্কফোর্স অভিযান পরিচালনা ও
- World Intellectual Property Organization, WIPO এর ফোকাল পয়েন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন।
কপিরাইট অফিস সাহিত্যকর্ম, নাট্যকর্ম, সংগীতকর্ম, রেকর্ডকর্ম, শিল্পকর্ম, চলচ্চিত্র বিষয়ককর্ম, বেতার সম্প্রচার, টেলিভিশন সম্প্রচার, কম্পিউটার-সফটওয়্যারকর্ম ইত্যাদি নিবন্ধন করে থাকে। মেধাসম্পদের আর্থিক অধিকার হস্তান্তরযোগ্য। কপিরাইট নিবন্ধন করা হলে সৃজন কর্মের নৈতিক ও আর্থিক অধিকার অর্থাৎ মালিকানা সংরক্ষণ সহজ হয়। কপিরাইট নিবন্ধন আইনানুযায়ী বাধ্যতামূলক না হলেও, সৃজন কর্মের মালিকানা নিয়ে আইনগত জটিলতা দেখা দিলে ‘কপিরাইট নিবন্ধন সনদ’ প্রমাণপত্র হিসেবে বিজ্ঞ আদালতে ব্যবহৃত হতে পারে। কপিরাইট অফিস বাংলাদেশ সর্বদা আন্তরিক সেবা প্রদান করে থাকে।
কুষ্টিয়াশহর.কম প্রকাশিত যে কোন তথ্য প্রকাশ করতে চাইলে, অবশ্যয় আমাদের কাছ হতে অনুমতি নিতে হবে। অন্যথায় কাজটি বেআইনি হবে এবং আইন মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমাদের তথ্য আপনার জন্যই তৈরি করা, আমরা মুলত সারা বিশ্বে বাংলা ভাষা এবং এই ভাষার জ্ঞানী-গুনি ব্যাক্তি, ইতিহাস এবং ঐতিহ্যকে ছড়িয়ে দিতে চাই।