কামরুল ইসলাম সিদ্দিক বাংলাদেশের পল্লী অবকাঠামো উন্নয়নে অবিস্মরণীয় অবদান রেখে গেছেন। তিনি যখন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগে যোগ দেন তখন পল্লী অবকাঠামো কার্যক্রম ছিল বিক্ষিপ্ত এবং বিনিয়োগ ছিল যৎসামান্য। মুক্তিযোদ্ধা কামরুল ইসলাম সিদ্দিক এ দেশের অর্থনৈতিক মুক্তিরও এক সৈনিক।
অসাধারণ নেতৃত্বের গুণাবলির সমন্বয় ঘটেছিল এই মানুষটির বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনে। দেশের অবকাঠামো উন্নয়নে তরুণ প্রকৌশলীরা তাঁর নেতৃত্বে নিরন্তরভাবে কাজ করেছেন তাঁর সঙ্গে। আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের গ্রাম, ইউনিয়ন, উপজেলা, পৌরসভার অবকাঠামোতে যা কিছু উন্নয়ন হয়েছে, তাঁরই নেতৃত্বে হয়েছে এলজিইডির মাধ্যমে। অবকাঠামো উন্নয়নে সত্যি উন্নয়নশীল দেশের একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে এলজিইডির ভূমিকা অবাক করার মতো।
তিনি আধুনিক প্রযুক্তি ও দক্ষ ব্যবস্থাপনায় এলজিইডিকে গড়ে তুলেছেন নিপুণ হাতে। দেশের প্রতিটি জেলায় গড়ে তুলেছেন এলজিইডির আধুনিক ব্যবস্থাপনাসমৃদ্ধ কার্যালয়। দেশের উন্নয়ন অবকাঠামো গড়ে তোলায় যে ভূমিকা রেখে গেছেন, জাতি তা চিরদিন স্মরণ রাখবে। তাঁর গতিশীল নেতৃত্বে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ পল্লী অবকাঠামো ও দারিদ্র্য নিরসনে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে গেছেন। কামরুল ইসলাম সিদ্দিকের কর্মকাণ্ড থেকে এ দেশের প্রশাসক ও প্রকৌশলীদের অনেক কিছু শেখার রয়েছে। তাঁকে বলা যায় এ দেশের সবচেয়ে সফল প্রকৌশলী ও ব্যবস্থাপক। কেবল অবকাঠামো বিনির্মাণ নয়, পরিবেশ উন্নয়ন, পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা, আন্তর্জাতিক নদীর জল হিস্যা থেকে দেশের লাভবান হওয়ার কৌশল নির্ধারণসহ অসংখ্য বিষয়ে তাঁর উদ্যোগী ভূমিকা ছিল চোখে পড়ার মতো। যেখানে যেভাবে সুযোগ পেয়েছেন সেগুলোকে কাজে লাগিয়ে আধুনিক ও জনমানুষের বৃহত্তর কল্যাণে অন্যকে প্রভাবিত করেছেন এবং কাজ আদায় করেছেন দেশের স্বার্থে।
সারা জীবন নিষ্ঠা ও কর্তব্যের সঙ্গে দেশের জন্য কাজ করে সবাইকে দেখিয়েছেন দেশ গড়ার এক অনুকরণীয় পথ। কর্মনিষ্ঠ এই মানুষটির মেধাদীপ্ত পদচারণ ছিল উন্নয়ন আর সফলতার চারণভূমিতে। চার দশকে বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনে তিনি যেমন পেয়েছেন সহকর্মীদের শ্রদ্ধা, তেমনি পেয়েছেন এ দেশের মানুষের ভালোবাসা। দেশপ্রেমের চেতনায় সিক্ত সাফল্যের শিখায় উজ্জ্বল উদ্ভাসিত প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম সিদ্দিককে অনুকরণের মতো যথেষ্ট কারণ রয়েছে আগামী প্রজন্মের।
ড. আকবর আলি খান: সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা।