বাংলা তথ্য ভান্ডার সমৃদ্ধ করতে আমাদের এই প্রয়াস। ইতিহাস এবং ঐতিহ্যর তথ্য দিতে চাইলে ইমেইল kushtia.contact@gmail.com অথবা ফোন করুনঃ- ০১৯৭৮ ৩৩ ৪২ ৩৩

Select your language

ফকির মোকসেদ আলী শাহ্‌ - Fokir Moksed Ali Shah
ফকির মোকসেদ আলী শাহ্‌ - Fokir Moksed Ali Shah

মোকসেদ আলী শাহ্‌ ওরফে মকছেদ আলী শাহ্‌

মনটা আমার জন্ম বোকা
সহজ পথেই খেলো ধোকা

- ফকির মোকসেদ আলী শাহ্‌

১৯৫৪ সালের কোন একদিন তরুণ মোকসেদ আলী শাহ্‌ ঢাকার হাইকোটে মাজারে বাউলদের নিয়ে গান করতে গেলে কতিপয় মুসল্লি ও সাধারণ জনগণ পুলিশ ডেকে এনে তাদের আসরে হামলা চালায়; তাঁরা কুষ্টিয়া ফিরে আসে। সেই কবেকার কথা যখন বাউল গানকে সামাজিকভাবে অবজ্ঞা করা হতো-সেই সময়েই মোকসেদ আলী শাহ্‌ কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের ছাত্র ছিলেন। তিনিই লালন সম্প্রদায়ের প্রথম প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষিত বাউল।

কুষ্টিয়া শহরের হরিশংকরপুরে জন্ম নেয়া মোকসেদ আলী শৈশবেই বাউল গানের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েন। কলেজে পড়ার সময় গুণীজনের কাছে লালনের গান শুনতে শুনতেই বাউলদের সাথে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন। লালনের গানের প্রচলন, প্রসার এবং জনপ্রিয়তার ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন অগ্রগামী। একসময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে লালনের গান পরিবেশন করতেন। স্বাধীনতার পর রেডিও বাংলাদেশ ট্রান্সক্রিপশন সার্ভিস এর নিজস্ব শিল্পী হিসেবে চাকুরী করেন, কয়েক বছর পর সব ছেড়েছুড়ে দিয়ে পুনরায় কুষ্টিয়া চলে আসেন।

লালনের গান করার পাশাপাশি নিজেও গান রচনা করতেন। অনেকগুলো গানের মধ্যে প্রেরনামুলক ও বাউল গান মিলিয়ে তাঁর রচিত প্রায় ৬০টি গান সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে। তিনি লালনের বেশ কিছু গান ইংরেজিতে অনুবাদ করেন, যেগুলো পরে ভালো অনুবাদ হিসেবে পরিচিত লাভ করেছিল। শিষ্যসংখ্যা শতাধিক, তাঁর মধ্যে প্রবীণ বাউল খোদা বকস শাহ্‌ ছিলেন অন্যতম, যিনি পরবর্তীতে লালনের গানের উপর একুশে পদক পান। শিল্পকলার প্রায় সবগুলো শাখায় সাবলীলভাবে বিচরণরত এই প্রতিভাধর শিল্পীর প্রতি আমরা মনোযোগী হতে পারিনি বলেই হয়তো মোকসেদ আলী শাহের যোগ্য সন্মান আমরা আজও তাঁকে দিতে পারিনি।

তাইতো স্বল্পপরিসর জীবনের শেষভাগে এসে এই অভিমানী অসামান্য শিল্পী নিজেকে গুঁটিয়ে ফেলেন প্রচারের সকল মাধ্যম থেকে; চলে যান স্বেচ্চানির্বাসনে; অনিয়ম আর হতাশা তাঁকে বেশী দিন বাঁচতে দেয়নি। অবশেষে ১৯৮১ সালের ১৭ জুন এই মরমী সাধকশিল্পী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

মোকসেদ আলী শাহের মেয়ে রুশিয়া খানম তাঁর বাবার ফেলে যাওয়া পথেই হেঁটে চলছেন অবিরাম, তাঁর মতই গেয়ে চলেছেন লালনের গান-

মনের কথা বলবো কারে
কে আছে সংসারে।
আমি ভাবি তাই, আর না দেখি উপায়।।

লালন একাডেমীর ২০০৭ সালে লালনের গানে অনবদ্য অবদানের জন্য মোকসেদ আলী শাহ্‌কে মরণোত্তর লালন সম্মমনা পদক প্রদান করেছে।

Add comment

ইতিহাস এর নতুন প্রবন্ধ

সর্বশেষ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

তথ্য সম্পর্কে খবর

আমাদের নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করুন এবং আপডেট থাকুন
We use cookies

We use cookies on our website. Some of them are essential for the operation of the site, while others help us to improve this site and the user experience (tracking cookies). You can decide for yourself whether you want to allow cookies or not. Please note that if you reject them, you may not be able to use all the functionalities of the site.