আহারে জগতপতি, তোমা বিনা নাহি গতি
আহারে জগতপতি, তোমা বিনা নাহি গতি
ভিক্ষা মাঙ্গে এই দুরাচার।
তোমার কদমে মতি, থাকে যেন দিবারাতি,
পাই যেন তোমার দিদার।।
করি এই মিন্নতি, আমি তো অবলা জাতি,
মোরে দয়া কর পরয়ার।
আশকের মাশুক তুমি, কি আর বলিব আমি,
তোমা বিনা নাহিক নিস্তার।।
জীবের জীবন তুমি, সাধন না জানি আমি,
আছি আমি বড় গোনাগার।
দয়াবান স্বামী তুমি, হাদিছে শুনেছি আমি,
গোনাগারে করিবে উদ্ধার।।
আশা করি আছি বসে, প্রাণপতি পাব কিসে,
পতি পেলে জুড়াব জীবনে।
জীবন থাকিতে যদি, নাহি পাই প্রাণপতি,
তবে তারে পাব কোন দিনে।।
জীবনে না পাই যদি, মলে পাব গুণনিধি
প্রত্যয় না হয় মোর মনে।।
জীবন থাকিতে মোরে, দেখা দাও অধমেরে
আছি আমি তোমার ধিয়ানে।।
বিচ্ছেদের বড় জোর, হলো এই নিশি ভোর,
দুঃখ নাহি সহে মোর প্রাণে।
আমার আরজ সাঁই, তোমার দিদার পাই,
নিজরুপ দেখিব নয়নে।।
চক্ষু যদি দিলে সাঁই, তেমারি দেখিতে চাই,
দেখে শুনে থাকিব ধিয়ানে।
অন্য রুপ কত শত, দেখিতেছি কত মত,
বাঞ্জা আছে তব রুপ পানে।।
যার চক্ষু তারে দেখি, হৃদি-পদ্মে পুরে রাখি,
এই বাঞ্জা আছে মোর মনে।
গুনাদিন ফুরাইল, বাঞ্জা পূর্ণ কই হলো,
যে দিন হবে কত দিনে।।
তব আজ্ঞা বিনা সাঁই, জারা বালি নরে নাই,
বলি তাই হাদিছেতে শুনে।
অধমের প্রতি সাঁই, আজ্ঞা বুঝি কর নাই,
আশক হয় না তোমা পানে।।
তোমার আশক সাঁই, মনে যদি কিছু হয়,
বাদি তাই হয় রিপুগণে।
তুমি দয়া করা যারে, রিপুগন্ন কিবা করে,
সাক্ষী তার দেখেন আপনে।।
কত কত পাপী লোকে, দয়া করিলেন তাকে,
শুনি তুমি এত দয়াবান।।
সাবান কস্বী ছিল, হারামী ছাড়িয়া দিল,
হলো তার বাহাল এমান।।
নছুয়া কাফন চোর, গুনার নাহিক ওর,
হলো তার আশক ধিয়ান।
গুনা যে তওবা করে, বদি তার গেল দূরে,
পাইল মালেক ছোব্বাহান।।
নিজাম ডাকাত ছিলো, বড় বদি সে করিল,
তার কথা শুনিয়াছি কানে।
সাহা ফরিদের যেই, মুরিদ হইল সেই,
নাম তার অলির খান্দানে।।
তাহা শুনি নিরাঞ্জন, উদাস হইল মন,
কত গুনা করিয়াছি আমি।।
নছুহা সমান নাই, নিজাম ডাকাত নয়,
মাপ দিলে দিতে পার তুমি।।
গুনা যাহা করিয়াছি, মাপ দিলে আমি বাঁচি,
তোমার চরণে থাকি আমি।
মনে সাধ এই আছে, যত দিন রই বেঁচে
সাধন কবুল কর তুমি।।
পাঞ্জু বলে ওরে মন, কর তারে নিরীক্ষণ,
পাবে তুমি জগতের স্বামী।
দম বহে যত দিন, সাধনে না হও হীন,
বিনয় করিয়া বলি আমি।।
হেয়াজতুল্যা খোন্দকার, তিনার কদম সার,
করিলে পাইবে পরয়ার।
তিনি তো আল্লার অলি, হিরুচাঁদ গানে বলি,
তাহা বিনে না দেখি কিনার।।
তিনার যে তাবেদার, হীন পাঞ্জু খোন্দকার,
গোনাগার এই দুরাচার।
খেদমত নাহি জানি, নিজ গুণে রববানী,
খেদমতে রাখিবে আমার।।
ত্রিপদী ছাড়িয়া ভাই, পয়ারেতে বলে যাই,
যাহা আছে মনের বাসনা।
রচনা দেখিয়া ভাই, ভূল চুক ধর নাই,
কিবা লিখি আমিত দেওনা।।