প্রত্মতত্ব
বাংলা প্রত্নতত্ত্ব শব্দটি 'প্র+ত্ন= প্রত্ন' অর্থ- পুরাতন ও 'তৎ+ত্ব= তত্ত্ব'অর্থ- জ্ঞান বা বিজ্ঞান। সমষ্টিগত অর্থ হল, পুরাতন বিষয়ক জ্ঞান। প্রচলিত ধারণায়, বস্তুগত নিদর্শনের ভিত্তিতে অতীত পুনঃনির্মাণ করার বিজ্ঞানকেই প্রত্নতত্ত্ব বলে চিহ্নিত করা হয়। অতীতের সংস্কৃতি ও পরিবেশগত নিয়ে চর্চা করে এমন অন্যান্য বিজ্ঞান বা বিষয়গুলোর (যেমন- ভূতত্ত্ব, পরিবেশ বিজ্ঞান, ভূগোল, ইতিহাস, মনোবিজ্ঞান, দর্শন, ধর্মতত্ত্ব ইত্যাদি) মধ্যে প্রত্নতত্ত্বের বিশেষত্ব হলো- এটি কেবল বস্তুগত নিদর্শন অর্থাৎ প্রামাণ্য তথ্য নিয়ে কাজ করে এবং তার সাথে মানুষের জীবনধারার সম্পর্ক নির্ণয় করে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়- ভূতাত্ত্বিক ও পরিবেশ বিজ্ঞানীরা প্রাচীন ভূমিরূপ ও অন্যান্য পরিবেশগত তথ্য বিশ্লেষণ করে ইনামগাঁওয়ের কয়েকহাজার বছরের বৃষ্টিপাতের ধরনের একটি উপাত্ত হাজির করেছেন। প্রত্নতাত্ত্বিকরা প্রাচীন ভূমিরূপ ও অন্যান্য পরিবেশগত তথ্য উদ্ধারের এই প্রক্রিয়ার সাথে যুক্ত থাকলেও ওই বিশেষ বৃষ্টিপাতের পরিস্থিতিতে মানুষ কিভাবে বসবাস ও জীবনযাপন, এই বিশেষ বিশ্লেষণটি প্রত্নতাত্ত্বিকরা করে থাকেন। ইনামগাওয়ের পরিবৈশিক তথ্য ও গর্তবসতিগুলো এই দুই প্রাচীন উপাদান মিলিয়ে প্রত্নতাত্ত্বিকরা সেই সময়ের মানুষের জীবনপ্রণালি বিশ্লেষণ করতে চেষ্টা করেন। তাই প্রত্নতত্ত্বের অধ্যয়নের মূল বিষয়গুলো হলো- ভৌত ধ্বংসাবশেষ, পরিবেশগত তথ্য, জৈব অবশেষ বা জীবাশ্ম, প্রাকৃতিক-সাংস্কৃতিক ভূদৃশ্যাবলী ইত্যাদি। আর প্রত্নতত্ত্বের কাজ হলো- এইসব বিষয়কে বিশ্লেষণ করে প্রাচীনকালের মানুষ এবং পরিবেশ ও প্রকৃতির তৎকালীন চিত্র বোঝা এবং তার মাধ্যমে মানুষ এবং পরিবেশ ও প্রকৃতির পরিবর্তনের ধারা ব্যাখ্যার মাধ্যমে ভবিষ্যতের মানুষ এবং পরিবেশের রূপরেখা নির্মাণ করা। এর ফলে প্রত্নতত্ত্ব প্রধানত ইতিহাস ও পরিবেশ বিজ্ঞানের এক সহযোগী। তবে পরিবৈশিক প্রেক্ষিতের চেয়ে মানুষের সংস্কৃতির সাথে সরাসরি সম্পর্কিত এমন বিষয়েই দীর্ঘকাল ধরে প্রত্নতাত্ত্বিক কর্মকাণ্ড সীমিত ছিল। কাজেই সাধারণত প্রত্নস্থান ও পুরাতন জিনিসপত্র আবিষ্কার, স্থান ও বস্তু চিহ্নিতকরণ ও নথিভুক্তকরণ এবং বস্তু ও কাঠামোর বিজ্ঞানসম্মত সংরক্ষণ ও তা জনসমক্ষে উপস্থাপন এর মধ্যেই প্রত্নতাত্ত্বিক চর্চা সীমাবদ্ধ ছিল। প্রাকৃতিক ও পরিবৈশিক প্রেক্ষিত এবং অবস্তুগত ভাবগত নিদর্শন যেমন সামাজিক সম্পর্ক ও মনোস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ বর্তমানে প্রত্নতত্ত্বে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এর ফলে প্রত্নতত্ত্ব বর্তমানে মানুষের অতীত ইতিহাসের গৃহবন্দী চর্চার বদলে পরিবেশ, ভূপ্রকৃতি এবং উদ্ভিদ ও প্রাণীজগতের অন্যান্য বিষয়ের অতীত অধ্যয়নের মধ্য দিয়ে ভবিষ্যত নির্মাণের বিজ্ঞান হিসেবে চর্চিত হচ্ছে।
-
হযরত শাহ পরাণ (রঃ)
হযরত শাহ পরাণ (রঃ) সুহরাওয়ার্দিয়া ও জালালিয়া তরিকার প্রখ্যাত সুফি সাধক। কথিত আছে যে, তিনি হজরত শাহ জালাল (রঃ) এর ভাগিনা এবং তাঁর জন্ম ইয়েমেনে। তিনি শাহজালাল (রঃ)-এর সাথে সিলেট অভিযানে অংশগ্রহণ করেন (১৩০৩ খ্রি) এবং সিলেটের বিভিন্ন স্থানে ইসলাম প্রচারে নিয়োজিত হন। সিলেট শহর থেকে প্রায় ৭ কিমি দূরে দক্ষিণগাঝ পরগনায় খাদিম নগরে খানকাহ স্থাপন করে তিনি আধ্যাত্মিক সাধনা শুরু করেন। সিলেট অঞ্চলে ইসলাম প্রচার ও মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠায় শাহ পরানের ভূমিকা ছিল তাৎপর্যপূর্ণ।
-
হযরত শাহজালাল
শাহজালাল (আরবি: شاه جلال, জন্ম:- ১২৭১ – মৃত্যু:- ১৩৪৬) ভারতীয় উপমহাদেশের বিখ্যাত সুফি দরবেশ। তাঁর পুরো নাম শেখ শাহ জালাল কুনিয়াত মুজাররদ। ৭০৩ হিজরী মোতাবেক ১৩০৩ ইংরেজী সালে ৩২ বছর বয়সে ইসলাম ধর্ম প্রচারের লক্ষ্যে অধুনা বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলে এসেছিলেন বলে ধারণা করা হয়।
-
কুষ্টিয়ার ঐতিহাসিক এবং দর্শনীয় স্থানসমূহ
কুষ্টিয়া বাংলাদেশের অন্যতম দর্শনীয় স্থান হিসেবে সুনাম অর্জন করেছে। বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলাতে রয়েছে নাম করা মসজিদ, মন্দির, গির্জা, দর্শনীয় স্থান, নদ নদী এবং ইতিহাসের নাম করা গুণী ব্যাক্তিদের পটভূমি। কুষ্টিয়ার ধূলি কোণায় মিশে আছে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, নীল চাষের বিরুদ্ধে আন্দোলন, পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে আন্দোলন, সামাজিক আন্দোলন, ইসলামিক আন্দোলন, বাউল মতের আন্দোলন। ঝিনাইদহ, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, রাজবাড়ীও এর ভিতর অন্তর্গত। কুষ্টিয়াতে বহিরাগত যারা এসেছে তাঁরা আর ফিরে যাইনি কুষ্টিয়াতেই স্থায়ী বসবাসের বন্দোবস্ত করেছে। তাঁর কারণ হিসেবে ধরা যেতে পারে কুষ্টিয়ার প্রকৃতি এবং সমাজের মানুষ। নিম্নে কিছু দর্শনীয় স্থান সমূহের বর্ণনা দেওয়া হলঃ-
-
ঝাউদিয়া শাহী মসজিদ
কুষ্টিয়া শহর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে সদর উপজেলার ঝাউদিয়া গ্রাম। সেখানেই অবস্থান ইতিহাসের সাক্ষী প্রাচীন এই মসজিদের। দেশের অন্যতম ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন এই মসজিদটি।
-
মিয়ার দালান
বাংলাদেশের ঝিনাইদহ জেলার সদর থানায় অবস্থিত একটি পুরানো জমিদার বাড়ী। বড়ীটি স্থানীয় নবগঙ্গা নদীর উত্তর দিকে অবস্থিত। ঝিনাইদহ শহরের প্রাণকেন্দ্র থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে এটি অবস্থিত। বর্তমানে বাড়ীটি ভগ্নপ্রায়।
Page 2 of 2