কচি খন্দকার (জন্মঃ- ২৯ সেপ্টেম্বর ১৯৬৪) জন্ম থেকে মৃত্যু, এই তো জীবন। খুব অল্প সময় হলেও জীবন কিন্তু সুন্দর। তবে তা মাঝে মাঝে নিষ্ঠুরও হয়। সেটা প্রকৃতির খেলা। সে খেলায় হার-জিত তো থাকবেই। তাই বলে কি জীবন থেমে থাকবে? না, থাকে না। জীবন তার গতিতেই চলবে। এই গতি ধরে রাখার জন্যই রয়েছে মন নামক এক কল্পনার জগৎ। যে জগতের কোনো বয়স নেই। অজস্র বছর ধরে বেঁচে থাকে সে। শরীরের মৃত্যু হলেও মনের কোনো মৃত্যু নেই।
এই বয়সের খেলা বোঝাতেই বোধহয় তার নাম রাখা হয়েছে কচি। পুরো নাম কচি খন্দকার। নিজের মধ্যে এখনও তারুণ্য ধরে রেখেছেন। নাট্য নির্মাণ ও অভিনয় দুই দিকেই তিনি ব্যতিক্রম। বর্তমান সময়ে অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি ডিরেক্টর গিল্ডের সহ-সভাপতি হয়েছেন।
অভিনেতা, নির্মাতা, নাট্য পরিচালক, স্ক্রিপ্ট রাইটার ও সংগঠক কচি খন্দকার ১৯৬৪ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়াতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার খাইরুল আনাম মন্টু খেলার জগতে ছিলেন একজন নিবেদিত গোল রক্ষক ও মাতা খন্দকার আনোয়ারা বেগম মায়া।
কুষ্টিয়া শহর একসময় দাপিয়ে বেড়িয়েছেন থিয়েটার আর সংগঠন নিয়ে। নবম শ্রেণিতে পড়াকালীন সময়ে নাটক লিখে বন্ধুদের মধ্যে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছেন। কুষ্টিয়া শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতির উর্বর ভূমি। এ জেলাতেই ‘অনন্যা অনআশি’ নামে নাট্যদলের প্রতিষ্ঠাতা। সেখান থেকেই তার নাট্যচর্চা শুরু। নাট্যদলটি কুষ্টিয়ায় সাংস্কৃতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। কেবল অভিনয় নয়, কচি খন্দকার নির্মাতা হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত। এতোদিন ছোট পর্দার জন্য নির্মাণ করলেও এবার মন দিয়েছেন বড় পর্দার নির্মাণে।
তাঁর পরিচালনায় এরই মধ্যে ‘এফডিসি’, ‘ইয়েস বস নো বস’, ‘নো কোশ্চেন নো আনসার’, ‘প্রবাদ বাক্য’ ধারাবাহিক নাটক প্রচারিত হয়েছে। মোস্তফা সরোয়ার ফারুকীর পরিচালনায় ‘ব্যাচেলর’, ‘মেড ইন বাংলাদেশ’, ‘থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার’ এ অভিনয় করেছেন। এছাড়া নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুর পরিচালনায় ‘গেরিলা’ ছাড়াও মোস্তফা কামাল রাজের ‘প্রজাপতি’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। মিডিয়ায় সব জায়গায় রয়েছে তার সরব উপস্থিতি। বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে অভিনয় করেছেন। এছাড়া তিনি একটি বিজ্ঞাপন নির্মাণও করেছেন।
ছোটবেলা থেকেই চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানের প্রতি তাঁর একধরনের আগ্রহ ছিল। সেই আগ্রহের কারণে একসময় চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানের জন্মদিনকে কেন্দ্র করে নড়াইলের জনগণের সাহায্যে সুলতান মঞ্চ তৈরি করেন। এরপর থেকে ওখানে প্রতি বছর ‘সুলতান মেলা’ বসে। ওই মেলার পেছনে কচি খন্দকারের বিরাট ভূমিকা রয়েছে। এ মেলাটি এখন আন্তর্জাতিক মেলা হিসেবে গণ্য করা হয়। নড়াইলে গ্রাম থিয়েটারের নাট্যশিল্পী কচি খন্দকার।
তথ্য কৃতজ্ঞতাঃ- কুষ্টিয়ার ইতিহাস - ড. মুহম্মদ এমদাদ হাসনায়েন/সারিয়া সুলতানা এবং সময়ের দর্পণ।