দৌলতপুরের হীরের টুকরো। অধ্যাক্ষ সামসুল হক কোরায়শী একজন লেখক ও শিক্ষাবিদ। তিনি ১৯৩৭ সালে দৌলতপুর উপজেলার ১০নং দৌলতপুর ইউনিয়নের দৌলতখালি গ্রামে পীর বংশে জন্ম গ্রহন করেন। তিনি তদানিন্তন বিখ্যাত আলহাজ্জ মৌলানা আফসার আলি সাহেবের ছোট ছেলে। তাঁর দাদা শুফি সাধক হযরত মৌলানা ইসাহক আলি। সমাজ সেবক এবং নিবেদিত প্রাণ।
পীর বংশের কৃতি সন্তান সামসুল হক কোরায়শী ১৯৫১ সালে খাস মথুরা পুর হাই স্কুল থেকে মেট্রিক পাশ করেন। ১৯৫৩ সালে রাজশাহী সিটি কলেজ থেকে আই,এ এবং স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। পরবর্তী সময়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা, সাহিত্য, ইসলামের ইতিহাস এবং সংস্কৃতি বিষয়ে এমএ এলএলবি ডিগ্রি লাভ করেন।
তিনি ১৯৬২ সালে রাজশাহী সিটি কলেজে রাষ্ট্র বিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসাবে যোগ দান করেন। নিজ দক্ষতার বলে ১৯৬৫ সালে উপাধ্যক্ষ পদ লাভ করেন। ১৯৭২সালে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড়ের কলেজ পরিদর্শক হিসাবে যোগ দান করেন। অত্যান্ত সফলতার সাথে ১৯৯১ সালে অবসর গ্রহন করেন।
ছাত্র জীবন থেকে সামসুল হক কোরায়শী সাহিত্য চর্চা শুরু করে। রাজশাহী এবং ঢাকায় তাঁর কবিতা ও প্রবন্ধ ছাপা হয়। পরবর্তীকালে তিনি এক জন কবি সাহিত্যিক হিসাবে খ্যাতি ও সুনাম অর্জন করেন। তাঁর রচিত গ্রন্থঃ-
১। গোধুলির কান্না, প্রকাশ কাল (১৯৭০)
২। প্রসন্ন প্রহর, প্রকাশ কাল ১৯৯২।
৩। শিশুতোষ গ্রন্থ হুর পরী কিন্নরী , প্রকাশ কাল ১৯৮৭সাল।
৪। পান্তা বুড়ি শান্তা বুড়ি, প্রকাশ কাল ১৯৮৯ সাল।
৫। ভুবন ডাংগার ভুত প্রকাশ কাল ১৯৮৯ সাল।
৬। ভয়ের শেষে বীরের বেশে, প্রকাশ কাল ১৯৯০।
৭। ঐতিহ্যবাহী রাজশাহী সাধারন গ্রন্থাগারে শত বছর স্মারক গ্রহন্থ (১৯৮৪)
তাঁর সম্পাদিত একটি উল্লেখ যোগ্য সংকলন। তাঁর গৌরবান্বিত পুর্ব পুরুষ ধর্মীয় আধ্যাত্মিক সাধক সমাজ সংস্কার হযরত মৌলানা ইসাহক (র:) এবং ২০০৮ শীর্ষক জীবনীগ্রন্থ রচনা করেছেন। তিনি আমাদের ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী। সংস্কৃতিতে হীরের টুকরো মত মানুষ।
২০০৭ সালে রাজশাহী লেখক পরিষদ তাঁকে সংবর্ধনা দেন। তিনি রাজশাহী বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্টানের সাথে জড়িত। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য। রাজশাহী বঙ্গবন্ধু কলেজের প্রতিষ্ঠতা। বর্তমানে তিনি চোখের পিড়া ভুগলেও ক্ষুর ধার কলম শক্তির ব্যাবহারে তৎপর আছেন। এই জন্য এই লেখক কে আমরা আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন সহ অভিনন্দন জানাই এবং জ্ঞানির জন্য আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিনের কাছে কামনা বাক্যে বলব উনাকে সহি সালামতে রাখুন।