অমূল্য শাহ বা আমির আলী (জন্ম:১৮৭৯ - মৃত্যু:১৯৫২) ছিলেন লালন শাহ এর বাউল ধারার পরবর্তী প্রজন্মের অন্যতম প্রধান বাউল। তার পারিবারিক নাম আমির আলী হলেও তরুণ বয়স হতেই তিনি অমূল্য শাহ নামে পরিচিতি পাওয়ায় সে নামেই সকল প্রচার, প্রকাশনায় ও সমাজে পরিচিত। মূল নামে তার পরিচয় নাই বল্লেই চলে।
অমূল্য শাহ ১৮৭৯ সালে (১২৮৬ বঙ্গাব্ধ) ঝিনাইদহ মহেশপুর উপজেলার নওদাগাঁয়ে জম্মগ্রহণ করেন। পিতা খোশতোন আলী ও মাতা রাহাতন নেছার দু’পুত্র।
প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করে তিনি মহেশপুরের হরিদাস বৈরাগীর কাছে রাগসঙ্গীতে পারদর্শী হয়ে উঠেন। যন্ত্রসঙ্গীতেও তাঁর দক্ষতা জম্মে। কলকাতায় তিনি উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে তালিম নেন। পরে তিনি বর্ধমান-বীরভূমের বৈষ্ণব-বাউলদের সংস্পর্শে আসেন। তিনি কীর্তন ও বাউল গানের প্রতি আকৃষ্ট হন। পরবর্তীতে তিনি হরিণাকুন্ডু উপজেলার হরিয়ারঘাটার খোদাবকশ শাহের আখড়ায় যান। এ আখড়ায় লালন সঙ্গীতের প্রতি তিনি আসক্ত হন।
আমির আলী মরমী ভাবসাধনায় ও কণ্ঠসঙ্গীতে অসামান্য দক্ষতা অর্জন করায় তার দীক্ষাগুরু জহুর শাহ কর্তৃক ‘অমূল্য’ নামে ভূষিত হন।
তিনি লালন সঙ্গীত সংগ্রহ এবং সুর আয়ত্ত করার ক্ষেত্রে অনন্য অবদান রেখে গেছেন। তার ত্রিশ বছরের সাধনা জীবনের অবদানকে লালন সঙ্গীত প্রচার ও সাধারণ সমাজে জনপ্রিয় সঙ্গীতের মর্যাদা লাভের একটি বিশেষ মাধ্যম রুপে স্মরণ করা হয়ে থাকে।
অমূল্য শাহ শুধু সঙ্গীত শিল্পীই নন বরং ছিলেন গীতিকারও। তার রচিত দু’টি উল্লেখযোগ্য গানঃ
- পাখি উড়ে গেল, সাধের পিঞ্জর ভাঙ্গিয়া
- তোরা ধর গো ধর আমার প্রাণবন্ধুরে
লোকমুখে ছড়িয়ে থাকা তার অসংখ্য লোকসংগীত আজও সংগৃহীত হয়নি।
ভাবসঙ্গীতের বিশেষ ব্যক্তিত্ব অমূল্য শাহ ১৯৫২ সালে মৃত্যু বরণ করেন।