বাংলা তথ্য ভান্ডার সমৃদ্ধ করতে আমাদের এই প্রয়াস। ইতিহাস এবং ঐতিহ্যর তথ্য দিতে চাইলে ইমেইল kushtia.contact@gmail.com অথবা ফোন করুনঃ- ০১৯৭৮ ৩৩ ৪২ ৩৩

Select your language

কুষ্টিয়ার মোহিনী মিলের ঐতিহ্য নতুন রুপে ফিরে আসুক আগামী প্রজন্মের কাছে
কুষ্টিয়ার মোহিনী মিলের ঐতিহ্য নতুন রুপে ফিরে আসুক আগামী প্রজন্মের কাছে

এক সময়ের এশিয়ার সর্ববৃহৎ ঐতিহ্যবাহী বস্ত্রকল কুষ্টিয়ার মোহিনী মিল আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্যাপক অর্থনৈতিক জোয়ারে প্রসিদ্ধ ছিল। কিন্তু আজ সারা দেশের এত উন্নয়ণের মাঝেও মিলটির এই করুণ পরিণতির অবস্থার দিকে তাকালে কুষ্টিয়াবাসী দুঃখ প্রকাশ করে থাকেন। অনেকে মনে করেন, এখনও মিলটি রাষ্ট্রের শিল্প উন্নয়ণের স্বার্থে ফিরিয়ে নিয়ে পুণঃরায় নতুন প্রযুক্তিতে চালু করার জন্য বাংলাদেশ সরকার যথাযথ উদ্যোগী হলে হয়তো মোহিনী মিল আবারও পেতে পারে হারানো দিনের সেই ঐতিহ্য।

সেই সময়ের অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি মোহিনী মিল ও এর জায়গা সম্পত্তি কালের কষাঘাতে কি হারিয়ে যাবে ? এর যন্ত্রাংশ-সম্পত্তি তথাপি মিলটি রক্ষা করতে হলে এখনই সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এই বিষয়ে নতুন করে সঠিক উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। কেউ যেন এই মিল ও এর সম্পত্তি স্থানীয় অসাধু ব্যক্তিদের মাধ্যমে ভিন্ন খাতে না নিতে পারে সেই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মহল এবং সরকারকে কঠোর হতে হবে। নতুবা মিলটি চিরকালের মত ধ্বংস হলে বা তার ঐতিহ্য আধুনিক রুপে ফিরিয়ে দিতে না পারলে কুষ্টিয়াবাসীকে এই লজ্জা বহন করতে হবে আগামী প্রজন্মের কাছে।

কয়েক দশক ধরে বন্ধ থাকা এই মিলটির যন্ত্রাংশ যেমন ধ্বংসপ্রায় তেমনি জমি ও ঝুকিপূর্ণ ভবন পরিত্যক্ত ভগ্নস্তুপে পরিণত হয়ে হারিয়ে যেতে চলেছে। মালিকানা বা নাম পরিবর্তন হলেও মোহিনী মিল চালু পর থেকে কত কোটি টাকার যন্ত্রাংশ ও সম্পত্তি লুটপাট হয়েছে তা খতিয়ে দেখা উচিত। এর পাশাপাশি যেটুকু আছে তাও ধ্বংস হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।

সেই সময়ে ভারতের প্রখ্যাত ব্যবসায়ী মোহিনী মোহন চক্রবর্তী কুষ্টিয়ার বড় স্টেশনসংলগ্ন জায়গায় ১৯০৮ সালে মিলপাড়া এলাকায় ১০০ একর জায়গার ওপর একটি সূতার মিল স্থাপন করেন। পরে মোহিনী মোহন চক্রবর্তীর মৃত্যুর পর নানাবিধ স্থানীয় অসাধু ব্যক্তিদের অপকর্মের কারণে মিলটি প্রতি বছর বিপুল পরিমানে লোকসান দিতে থাকে। অবশেষে ১৯৮২ সালে মোহিনী মিল দেউলিয়া তালিকাভুক্ত হয়। এর পর সরকারের নিকট থেকে মেসার্স আফসার গ্রুফ ইন্ড্রাস্ট্রিজ এর মালিক জনাব নজরুল ইসলাম এই মিলটি কিনে নেন এবং ১৯৮৪ সালে ২৫ শে সেপ্টেম্বের থেকে শাহ মাজদুম টেক্সাইল মিলস লিমিটেড নামে নামকরণ হয়। কিছুদিন পর স্থানীয় নানা সমস্যার কারণে তাও বন্ধ ঘোষনা করা হয়। কিন্তু আজ সরকারি উদ্যোগে পূণঃরায় চালু করার বিষয়ে বিবেচনায় রেখে মোহিনী মিলের খোয়া যাওয়া সকল যন্ত্রাংশ-জায়গা উদ্ধার করতে হবে। আর হারানো ঐতিহ্যের দিক বিবেচনায় রেখে এটি রক্ষা এবং চালুর বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন কুষ্টিয়াবাসী।

জানা যায়, ভারতের প্রখ্যাত ব্যবসায়ী মোহিনী মোহন চক্রবর্তী মিল স্থাপন করেন। তখন সুদূর ইংল্যান্ড থেকে পিতলের হ্যান্ডলুম মেশিন আর পিতলের তৈরি প্রায় ২০০ তাঁত আমদানি করে বসিয়েছিলেন তার মিলে।এ সময় ভারতবর্ষের কয়েকটি জায়গায় এ ধরনের আধুনিক সুতার কলের মধ্যে মোহিনী মিল ছিল অন্যতম।এখানে প্রায় তিন শত শ্রমিক কাজ করতেন।এ মিলে উৎপাদিত সুতা ভারতবর্ষের সব প্রদেশ ছাড়াও বার্মা, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায় যেত।অতঃপর মাত্র ৮টি তাঁত নিয়ে মিলটি উৎপাদন শুরু করে। পরবর্তীতে মোহিনী মিল ব্যপ্তি লাভ করে। এর শ্রমিক সংখ্যা প্রায় তিন হাজারে উন্নীত হয়। মোহিনী মিলের শাড়ি ও ধুতী বাংলায় জনপ্রিয়তা লাভ করে। মিলটি সমগ্র এশিয়ার সর্ববৃহৎ কাপড়ের কল নামে খ্যাত ছিল। এর উপরে অনেকের জীবন জীবিকাও নির্বাহ ছিল। অনুরুপ সচেতন মহল মনে করেন, মোহিনী মিলের ঐতিহ্য নতুন রুপে ফিরে আসুক আগামী প্রজন্মের কাছে।

Add comment

ইতিহাস এর নতুন প্রবন্ধ

সর্বশেষ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

তথ্য সম্পর্কে খবর

আমাদের নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করুন এবং আপডেট থাকুন
We use cookies

We use cookies on our website. Some of them are essential for the operation of the site, while others help us to improve this site and the user experience (tracking cookies). You can decide for yourself whether you want to allow cookies or not. Please note that if you reject them, you may not be able to use all the functionalities of the site.